মোবাইল ফোনে রিচার্জের ওপর ১ শতাংশ হারে উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই সারচার্জ প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না—তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল জারি করেন।
এর আগে ‘এখনো পদ্মা সেতুর জন্য মোবাইল রিচার্জে কাটছে টাকা’ শিরোনামে গত ২৫ মে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বেসরকারি সংগঠন কনশাস কনজ্যুমার সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষ থেকে গত ১০ জুলাই রিটটি করা হয়।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী ও আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।
২০১৫ সালে উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি (আরোপ ও আদায়) আইন করা হয়। এই আইনের মাধ্যমে ২০১৬ সালের মার্চ মাস থেকে প্রতিটি মোবাইল ফোন অপারেটরকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তারা যেন তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে ১০০ টাকা রিচার্জের বিপরীতে ১ টাকা করে সারচার্জ কেটে রাখে ও সরকারকে পরিশোধ করে। এ সারচার্জ কী কারণে কাটা হবে, এটি আইনে স্পষ্ট করা হয়নি। এটা পদ্মা সেতুর জন্য কাটা হচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর কাছ থেকে জানা যায় যে ১ শতাংশ হারে সারচার্জ পদ্মা সেতুর উদ্দেশ্যে কাটা হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯ বছর হয়ে যাচ্ছে—এখনো ওই সারচার্জ আদায় করা হচ্ছে।
গত ২৫ মে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে বর্তমানে চারটি মোবাইল অপারেটরের অধীনে রয়েছে প্রায় ১৯ কোটি গ্রাহক। ভয়েস কল, ইন্টারনেটসহ নানা সেবা ব্যবহারের জন্য নিয়মিত মোবাইল রিচার্জ করে থাকেন তাঁরা। তবে রিচার্জ করা অর্থের একটি অংশ এখনো চলে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর অর্থায়নে। ২০১৬ সালের মার্চ থেকে শুরু হয় পদ্মা সেতুর জন্য সারচার্জ। ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় বহু কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু। সেতুটি চালুর প্রায় তিন বছর পার হলেও মোবাইল ফোন গ্রাহকদের কাছ থেকে এখনো নেওয়া হচ্ছে সারচার্জ। প্রতিবার রিচার্জের ক্ষেত্রে ১০০ টাকায় ১ টাকা করে কেটে নেওয়া হচ্ছে পদ্মা সেতু উন্নয়ন ফান্ডের নামে।