কয়লা সংকটের কারণে আজ দুপুর ১২টা নাগাদ বন্ধ হয়ে গেল পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বন্ধ হয় প্রথম ইউনিট। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সমগ্র বরিশাল, খুলনা ও ঢাকার কিছু অংশের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়লা সংকটের কারণে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে দুপুর ১২টা ১০মিনিট নাগাদ। ডলার সংকটের কারণে এই কয়লার সংকট দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে কয়লা আনার জন্য এলসি খোলা হয়েছে। আশা করছি, এই মাসের শেষের দিকে কয়লাবাহী প্রথম জাহাজ তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে এসে পৌঁছাবে।’
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)। এটি পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নামেই পরিচিতি। কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের মোট সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। তবে সঞ্চালন লাইন তৈরি না হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন একটি ইউনিট বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিছুদিন ধরে দুটি ইউনিটই চলছিল। কয়লা সংকটে প্রথমে একটি বন্ধ হয়ে যায়। এবার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল।
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কয়লা কেনার জন্য সিএমসিকে অর্থ দিয়ে থাকে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। প্রতি ছয় মাস পরপর টাকা আদায় করে তারা। তবে গত এপ্রিল পর্যন্ত বকেয়া পড়ে প্রায় ৩৯ কোটি ডলার (প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা)। গত বছরের নভেম্বরে তারা যে ঋণ দিয়েছিল, সেটি পরিশোধ করার কথা ছিল গত এপ্রিলে। কিন্তু পায়রা কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিল দিতে না পারায় নতুন করে কয়লা কেনা যাচ্ছে না।
কয়লা সংকটে গত ২৫ মে একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। আর আজ দুপুর ১২টায় ১০ মিনিটে বাকি ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ ওজোপাডিকো পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পটুয়াখালী জেলায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১৩ ইউনিটের বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়, সেখানে আমরা প্রতিদিন গড়ে ১০ ইউনিটের মতো বিদ্যুৎ পেয়ে থাকি—এ জন্য লোডশেডিং হচ্ছে। চাহিদামতো বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে আর লোডশেডিং হবে না।’
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, ‘সংকট কাটিয়ে দ্রুত কয়লা সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর কয়লা আসতে অন্তত ২৫ দিন সময় লাগতে পারে। সে কারণে জুনের তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’