হাদি হত্যাচেষ্টা মামলা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ ও তাঁর সহযোগীকে ভারতে পালাতে ‘ফিলিপ’ নামের একজন সহযোগিতা করে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন গ্রেপ্তার সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম। আজ বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির সময় আদালতকে তাঁরা এ কথা বলেন।
সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে আদালতে হাজির করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তাঁদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম প্রত্যেকের তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্ত ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার এই দুই আসামি ঘটনার পর মূল অভিযুক্ত ও অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের অবৈধভাবে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে সরাসরি সহায়তা করেন। তাঁদের যোগাযোগ, চলাচল ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সংযোগের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সিবিয়ন দিউ হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষ ও অবৈধ মালামাল পারাপারের একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। তিনি ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য জুয়েল আড়েংয়ের ভাগনে।
আদালতে সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানিতে অংশ নেন ঢাকা মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, দুই আসামি হাদি হত্যাচেষ্টা মামলার মূল আসামি ফয়সাল ও তাঁর সহযোগী আলমগীরকে ভারতে পালাতে সাহায্য করেছেন। কীভাবে তাঁরা পালিয়ে গেলেন এবং তাঁদের পালাতে আর কারা কারা সহযোগিতা করেছেন, তা জানার জন্য দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
এ পর্যায়ে আদালতের জিজ্ঞাসায় সিবিউন ও সঞ্জয় বলেন, ‘আমরা কেউ ভারতে পালিয়ে গেছে কি না, কিছু জানি না। তবে শুনেছি, ফিলিপ নামের একজন কাউকে কাউকে ভারতে পাচার করেছে।’
১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদি একটি রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুজনের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যান। গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গত সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত রোববার রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের।
হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল ও তাঁর সহযোগী আলমগীর ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে পুলিশের প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছে, তাঁরা ভারতে পালিয়ে গেছেন।