আজ ষষ্ঠী, দেবী দুর্গার বোধনের দিন। বোধন শব্দের অর্থ জাগ্রত করা। মর্ত্যে দুর্গার আবাহনের জন্য বোধনের রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়েই শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
ভগবান রাম শরৎকালে দেবীকে আহ্বান করেছিলেন বলে এ পূজা শারদীয় দুর্গাপূজা নামেও পরিচিত। পাঁচ দিনের এই উৎসব শেষ হবে আগামী ২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবীপক্ষের।
জানতে চাইলে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পুরোহিত রাজিব চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোববার সকালে বেলগাছের নিচে ঘট স্থাপন করে ষোড়শ উপাচারে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভে ষষ্ঠী পূজা শুরু হবে।
সনাতনী ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আসেন দেবী দুর্গা। তাঁর এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব। দশভুজা দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধরায় আসেন। সন্তানদের নিয়ে কয়েক দিন পিতার গৃহে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, ত্রেতাযুগে ভগবান রাম তাঁর স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার অকালবোধন করেন। ব্রহ্মার নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গার সাহায্যে রাবণ বধ করে সীতাকে উদ্ধার করেন তিনি। দেবীর সেই আগমনের সময়ই দুর্গোৎসব।
পঞ্জিকামতে, দেবীর এবারের আগমন গজে বা হাতিতে। শাস্ত্রমতে, এই গজই দেবীর সবচেয়ে সেরা বাহন। দেবীর আগমন গজে হলে মর্ত্যলোক সুখ-শান্তিতে ভরে ওঠে, ধরাধামে আসে সমৃদ্ধি। বলা হয়, এর ফল হয় শস্যশ্যামলা বসুন্ধরা। দেবীর গমন চলতি বছর দোলায় বা পালকিতে। যার ফল সেভাবে শুভ নয়। এটি মহামারি বা মড়কের প্রতীক।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের তথ্যমতে, দেশে এবার দুর্গাপূজা হবে ৩৩ হাজার ৩৫৫ মণ্ডপে। গত বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি দুর্গাপূজা হয়েছিল। সেই হিসাবে এবার ১ হাজার ৮৯৪টি দুর্গাপূজা বেশি হচ্ছে।
এবার ঢাকা মহানগরে ২৫৯টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর ঢাকা মহানগরে ২৫২টি পূজা হয়েছিল। সেই হিসাবে এবার ঢাকা মহানগরে সাতটি পূজা বেশি হবে।
নিরাপত্তায় ৪৩০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
দুর্গাপূজা উপলক্ষে সীমান্ত এলাকাসহ সারা দেশে ২ হাজার ৮৫৭ পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৩০ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম।