স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন লেখক, গবেষক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর। আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান তিনি।
বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। তার পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফি, পলিটিক্স অ্যান্ড ইকোনমিক্স (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
প্রথমে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। বদরুদ্দীন উমর ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের যাত্রা শুরু হয় তারই হাত ধরে। ১৯৬৮ সালে পদত্যাগ করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন।
বর্তমানে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি এবং বাংলাদেশ লেখক শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ‘সংস্কৃতি’ নামে একটি রাজনৈতিক সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন। তিনি ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। তাঁকে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ১৯৭৬ সালের মাঝামঝি অনুষ্ঠেয় বিশেষ কংগ্রেসের প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন এবং সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।