চাঁদপুর-২ (মতলব) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ড. মো. জালাল উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের চার সদস্য এবং বরিশাল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পৃথক পৃথক আদেশে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে ড. মো. জালাল উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
অন্যরা হলেন জালাল উদ্দিনের স্ত্রী শাহানাজ পারভিন, দুই ছেলে সাঈদ মোহাম্মদ রিজভী ও সাঈদ মোহাম্মদ আলভী এবং মেয়ে আয়েশা তাসিনীমা তানভী।
দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম মামুনুর রশীদ তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূত অর্থ উপার্জন করে তা নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক বিষান ঘোষ। আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
এ ছাড়া সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত পালক পুত্র মো. আসাদুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী ইসরাত জাহান ও আসাদুজ্জামানের ভাই আখতারুজ্জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাসরুল্লাহ হোসেন।
আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অভিযুক্তরা চোরা চালান, হুন্ডি ব্যবসা, শুল্ক ফাঁকিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ অর্জন করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন বলে দুদক অনুসন্ধান করছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা ও যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতার দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমি।
আবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় তাঁদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। ইতিমধ্যে তাঁরা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
প্রত্যেকের আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলার সময় দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে, তাঁরা যেকোনো সময় দেশত্যাগ করতে পারেন। তাঁরা দেশত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ কারণে প্রত্যেকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।