বিশ্বে গণহত্যা নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশিদের ওপর পাকিস্তানের নির্মম হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন হোসেনের ছেলে তৌহিদ রেজা নূর এই স্বীকৃতির জন্য গত ১৫ নভেম্বর আবেদন করেছিলেন।
এক বার্তায় তৌহিদ রেজা নূর এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। সুবর্ণজয়ন্তীর বছরেই এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষের জন্য এক বিশাল অর্জন ও প্রাপ্তি। এর মধ্য দিয়ে একাত্তরের হত্যাযজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রেও গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি পেল এবং এর মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথ সুগম হলো । এর মধ্যে অপরাপর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোও একাত্তরের গণহত্যাকে একে একে স্বীকৃতি দেবে বলে আমার বিশ্বাস।’
পোলিশ নাগরিক রাফায়েল লেমকিনের নামানুসারে লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইডের নামকরণ করা হয়েছে। রাফায়েল লেমকিনকে ‘জেনোসাইড’ বা ‘গণহত্যা’ শব্দটির উদ্ভাবক বলা হয়।
লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশনের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৩ বছরের শোষণ থেকে বাঙালির মুক্তির আন্দোলনকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। তারপর ৯ মাসে ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করা হয়। পরে প্রতিরোধ যুদ্ধে নামে বাঙালিরা। রক্তক্ষয়ী সেই সংগ্রামের পথ ধরে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
বিবৃতিতে লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ও অপরাধীদের জবাবদিহির জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একাত্তরের নির্মম হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা বলে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। লেমকিন ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকে ন্যায়বিচার পাওয়ায় সহায়তা ও সমর্থন প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাকিস্তানের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বানও জানিয়েছে।