আলুচাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চলতি মাস পর্যন্ত হিমাগারে পুরোনো আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আজ শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলু উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান। অ্যাসোসিয়েশন এই উৎসব প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসান।
উৎসবে উপদেষ্টা বলেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ২২ লাখ টন বেশি। ২০২৫ সালে আলু উৎপাদন খরচ কেজিপ্রতি স্থানভেদে ১৪ থেকে ১৭ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণ খরচ, পরিবহন, বস্তা, শ্রমিকের মজুরি ও অন্যান্য খরচসহ কেজিপ্রতি আলুর হিমাগার গেটে খরচ দাঁড়িয়েছে ২০-২৫ টাকা। বিপরীতে আলুচাষিরা হিমাগার গেটে ৮ থেকে ১৬ টাকা কেজি মূল্যে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাঁদের উৎপাদন খরচের চেয়েও অনেক কম। এর ফলে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত হিমাগারে পুরোনো আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তা ছাড়া এ বছর নতুন আলু বাজারে আসতে ১৫ দিন বেশি সময় লাগবে। তাই কৃষকদের বৃহত্তর স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে কোল্ড স্টোরেজ মালিকেরা হয়তো সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে তাঁদের। তবে খাদ্য উৎপাদনের কারিগর কৃষকেরা এতে লাভবান হবেন।
এ সময় কেজিপ্রতি আলু উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘দেশে বিপুল পরিমাণে আলু উৎপাদিত হলেও আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বাংলাদেশে মাত্র ২ শতাংশ আলু প্রক্রিয়াজাত করা হয়। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর পরিমাণ ৭ শতাংশ। তাই আলু প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন প্রক্রিয়াজাত উপযোগী আলুর উত্তম জাত নির্বাচন ও তার চাষাবাদ। আমদানিকৃত আলু বীজের প্যাকেটে এর নির্দিষ্ট দাম লিখে দিতে হবে। এতে কৃষকেরা উপকৃত হবেন।’
পেঁয়াজ আমদানির প্রসঙ্গ টেনে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বছর পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তারপরও কারও কারও কারসাজিতে এক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের স্বার্থে আমরা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি। বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা না আসা পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি চলবে।’