এই রোদ, এই বৃষ্টি। এই আবহাওয়ায় সব বয়সী মানুষ নানা ধরনের ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত গরমে, বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুদের ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়, পাশাপাশি এই সময় ওদের মেজাজও খিটমিটে হয়ে থাকে। তাই স্কুলগামী শিশুদের খাবার, জীবনযাপন এবং তাদের খিটমিটে মেজাজ ঠিক রাখার জন্য অভিভাবকদের বিশেষভাবে সচেতন থাকা জরুরি।
যেমন হবে শিশুদের জীবনযাপন
সূর্যের তাপমাত্রা যখন অতিমাত্রায় পৌঁছে যায়, তখন আমাদের শরীর থেকে পানি কমে যেতে থাকে। ফলে এ সময় উচিত শিশুদের ঘন ঘন অল্প করে পানি পান করানো। তা ছাড়া এই গরমে অনেক শিশুর পানির ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। আবার কোনো কোনো শিশু প্রস্রাব করতে গিয়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করে। তাই এ ক্ষেত্রে শিশুর অভিভাবকদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।
যা করবেন
শিশুর প্রতি অভিভাবকের কেমন আচরণ উচিত
শিশুরা স্কুল থেকে অতিরিক্ত গরমে বাসায় ফিরলে স্বাভাবিকভাবে মেজাজ খিটমিটে থাকবে। এই বয়সে আপনারাও যে ওদের মতো সময় পার করেছেন, সেই গল্প তাদের বলুন। শিশুদের সঙ্গে চড়া গলায় কথা না বলে তাদের সময় দিন। স্কুলে কী হয়েছে, সেসব ঘটনা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। কারণ, শিশুরা তার মা-বাবার কাছ থেকে মনোযোগ আশা করে। এখন শিশুরা শুধু মোবাইল ফোনে বিনোদন খোঁজে। কিন্তু অভিভাবকেরা পর্যাপ্ত সময় দিলে, তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করলে তাদের মানসিক বিকাশের পাশাপাশি মনও প্রফুল্ল থাকবে। তাই শিশুর সুস্থতা এবং সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তাদের সময় দিন।
গরমে শিশুদের জীবনযাত্রা যেমন হবে
একটি দিনের বেশির ভাগ সময় স্কুলগামী শিশুরা স্কুলে বা কোচিংয়ে কাটিয়ে দেয়। ফলে অতিরিক্ত ঘামে শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। ফলে যেসব শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তারা বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিনের স্কুলের পোশাক ও জুতা-মোজা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে। গরমের দিনে শিশুদের পোশাক অবশ্যই ঢিলেঢালা, সুতি ও নরম কাপড়ের হতে হবে। শিশুকে অবশ্যই বুঝিয়ে বলতে হবে, গরমে পর্যাপ্ত পানি পান না করলে তার কী কী সমস্যা হতে পারে। সেই সঙ্গে দৈনিক দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান নিশ্চিত করতে হবে। সারা দিন ক্লান্তির পর শিশুকে দু-তিন ঘণ্টা ঘুমাতে দিতে হবে।
লেখক: ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট অ্যান্ড ডায়েট কনসালট্যান্ট, মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন্স অ্যান্ড হসপিটাল