সেকালে শোবার ঘরের সিন্দুকের ভেতর মৃদু শব্দ তুলে জমে উঠত ঝুমঝুমে গয়নার গল্প। সোনা, রুপা, পিতলের পাশাপাশি মুক্তা আর পুঁতির মালা, কানের দুল, আংটি আরও কত কী! কিন্তু কেমন ছিল সেকালের অলংকার?
কানের দুলগুলো সে সময় অনেকটাই ভারী ছিল। কিন্তু নিয়ম রক্ষায় কষ্ট করে তা পরে থাকতে হতো অভিজাত বাড়ির নারীদের। নথ ব্যবহারের প্রচলনও ছিল। সোনার বাজুবন্ধ, টিকলি, বিছা, সীতাহার সবকিছুই ছিল বেশ ভারী। গয়নায় থাকত সূক্ষ্ম নকশা। এসব নকশাদার অলংকার একসময় রাজা-মহারাজারা একে অপরকে উপহার পাঠাতেন। মোগল আমলে গয়নার নকশায় যোগ হয় মিনা আর কুন্দনের ব্যবহার। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভারতবর্ষ তথা বাংলায়ও। সময়ের বিবর্তনে মিনা আর কুন্দনের নকশার গয়নার চল প্রায় উঠেই গিয়েছিল। আশার কথা, এখন আবার ঘুরেফিরে এসেছে।
ভারতবর্ষে বিশেষ করে রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশে প্রচলন ছিল সিলভার বিডস বা রুপার জপমালা। প্রচুর সংখ্যায় পাওয়াও যেত সেগুলো সেসব অঞ্চলে। এ সহজপ্রাপ্যতাই পুঁথির অলংকারের ব্যবহার ও বিকাশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
ঘুরেফিরে আবার নারীদের অলংকারে যোগ হয়েছে নানা রকম মুক্তা ও পুঁতির ভারী গয়না। বিশেষত, কানে বড় দুল পরার প্রচলন আবার শুরু হয়েছে। পাওয়া যাচ্ছে সোনা, রুপা, পুঁতি, মুক্তা ও পাথরের সম্মিলনে তৈরি ভারী গয়না। নিউমার্কেট, গাউসিয়া, দেশি দশ, অঞ্জন’স, যাত্রা, রঙ বাংলাদেশসহ দেশের প্রায় সব ফ্যাশন হাউস এবং জুয়েলারিতেই মুক্তা ও পুঁতির গয়না পাওয়া যায়। কানের দুল, চুড়ি, আংটি সবকিছুই তৈরি করা হয় মুক্তা দিয়ে। চাইলে বিভিন্ন নকশার মুক্তার গয়না নিজের নকশায় তৈরি করিয়েও নিতে পারেন। এ ছাড়া ফেসবুকের বিভিন্ন গয়নার পেজেও পাওয়া যাচ্ছে এসব গয়না। পছন্দ মতো কিনে ফেলতে পারেন এসব।