হোম > জীবনধারা

২০২১ এর জীবনযাপন

আনিকা জীনাত, ঢাকা

‘জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার—’।

বিশের পর একুশও শেষ। কিন্তু থেকে গেছে গড়ে ওঠা জীবনযাত্রা। এ জীবনযাত্রা বদলে দিতে ২০২০ সালের করোনা অতিমারি বেশ বড় ভূমিকা রেখেছিল। তার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে গিয়ে কিছু অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হয়েছে আমাদের। তার জন্য গড়ে উঠেছে নতুন প্রবণতা, ‘নিউ নরমাল’ আমাদের জীবনে স্থায়ী জায়গা তৈরি করেছে।

কাস্টমাইজড পোশাক
একই রকম পোশাক পরে বিভিন্ন উৎসব পালনের চল এ বছরও বহাল ছিল। ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এ প্রবণতা। এই পোশাকগুলোয় বিভিন্ন ধরনের নকশা স্থান পেয়েছে। হ্যান্ড পেইন্ট করা শাড়ি ও পাঞ্জাবিতে প্রকৃতির নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। সমুদ্রের ঢেউ, শিউলি ফুল, কাশবন, অপরাজিতা ফুল, ময়ূরের পেখম–সবই দেখা গেছে শাড়িতে। এ প্রবণতা সামনের দিকে আরও বাড়তে পারে।

খাবারে লাগাম
স্বল্প মেয়াদি লকডাউনের সময় বন্ধ ছিল হোটেল-রেস্তোরাঁ। ফুড ডেলিভারি অ্যাপের কারণে এ বছরও ঘরে বসেই বাইরের খাবার অর্ডার করা গেছে। লকডাউন উঠে গেলেও হোম ডেলিভারি নেওয়ার চল বহাল আছে। বাসায় যাঁরা রান্না করে খেয়েছেন, তাঁরা খাবার-দাবার রান্নায় তেল ও লবণ ব্যবহারে সতর্ক ছিলেন। সকালের নাশতায় জায়গা করে নিয়েছে ওটস, সিরাল, কর্নফ্লেক্স, ফল। স্বাস্থ্য সচেতনেরা দুধ-চায়ের বদলে গ্রিনটিকে জায়গা দিয়েছেন চায়ের কাঁপে। করোনা মহামারির পর থেকেই কমেছে দাওয়াত আদান-প্রদানের রীতি। সামাজিকভাবে মেলামেশার অভাব খানিকটা কমিয়েছে খাবারদাবারভিত্তিক গ্রুপগুলো। কে কী রান্না করেছেন তা নিয়ে জমজমাট ছিল ভার্চুয়াল আড্ডা। 

ব্যাকপ্যাক
হ্যান্ডব্যাগের জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিয়েছে পিঠে ঝোলানো ব্যাকপ্যাক। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো বটেই, কর্মজীবী নারীদের কাছেও ব্যাকপ্যাকের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
ছোট আকারের এই ব্যাগগুলোর ওজন কম। ব্যবহার করতেও বেশ সুবিধা। বড় ফিতাওয়ালা টোটব্যাগের প্রচলনও দেখা গেছে। অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য নারীরা বেছে নিয়েছেন মাইক্রো ব্যাগ। ভেতরে তেমন কিছু আঁটে না। তবে দেখতে বেশ স্টাইলিশ। ছোট চার কোনা ফিতাওয়ালা এই ব্যাগ ক্লাচ ব্যাগের জায়গা দখল করেছে।

বাসায় বিয়ে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই বিয়ের আয়োজন বাসায় সেরেছে। ঘরোয়া এই বিয়েতে মানুষের উপস্থিতি কম ছিল। কনেকে দেখা গেছে স্নিগ্ধ মেকআপে। বছরজুড়েই বিয়ের শাড়ি হিসেবে জামদানির দাপট ছিল। অনেকেই বিয়ের ছবি তুলেছেন ঘরের ভেতরে কিংবা ছাদে। রাতের বেলায় ছোটখাটো কোনো রেস্টুরেন্টে সেরেছেন বাকি আনুষ্ঠানিকতা। এর বিপরীত চিত্রও দেখা গেছে। অনেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার অপেক্ষায় ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ামাত্র ব্রাইডাল শাওয়ার, মেহেদি, সংগীত, গায়েহলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠান করেছেন।

ন্যুড মেকআপ
বাসায় বসে মেকআপ করার প্রচলন শুরু হয় গত বছর। ২০২১ সালেও একই ধারা অব্যাহত ছিল। মেকআপ শিখতে অনেকেই ইউটিউব টিউটোরিয়ালের সহায়তা নিয়েছেন। ভারী মেকআপের বদলে এখন ন্যুড মেকআপই বেশি জনপ্রিয়। মেকআপ আর্টিস্টদের কাছে ‘নো মেকআপ লুক’-এর আবদার ছিল চাহিদার তুঙ্গে। স্মোকি আই, কড়া লিপস্টিক ও ব্লাশন ব্যবহারের মাত্রা কম ছিল।

ইনডোর প্ল্যান্ট
গৃহবন্দী সময়ের কিছুটা ভাগ প্রকৃতিও পেয়েছে। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা বাড়ায় ঘরের আনাচকানাচে অনেকেই টব রেখেছেন। কেউ কেউ পুরো একটি র‍্যাক সাজিয়েছেন ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়ে। এ ছাড়া ফুল গাছের প্রতি মানুষের আলাদা আকর্ষণ ছিল। সাজানো-গোছানো বারান্দাও যে মনে প্রশান্তি আনে, তা আমাদের করোনাকালীন উপলব্ধি। 

হোম অফিস
বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাসা থেকে কাজের সুযোগ দিয়েছে। হোম অফিসের কারণে ল্যাপটপ, স্পিকার ও ওয়েবক্যামের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। ভিডিওর রেজল্যুশন বাড়াতে অনেকে স্ট্যান্ডসহ রিং লাইটও কিনেছেন। অনেকে বিছানায় বসে ল্যাপটপ ব্যবহারের জন্য ছোট টেবিল কিনেছেন। অনেক সম্মেলন, সভা ও আলোচনা হয়েছে জুম বা গুগল মিটে। ওয়েবিনারের কারণে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আলোচনায় যোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমেছে।

আরাম আগে
বাসায় বসে থাকার কারণে মানুষের অভ্যাসে কিছু বদল এসেছে। এরই প্রভাবে রাস্তাঘাটে দেখা যাচ্ছে ঢিলেঢালা জিনস। পায়জামার আকারও ঢোলা ছিল। আঁটসাঁট পোশাকে অনেকেই এখন আর স্বস্তি বোধ করছেন না।
তরুণ-তরুণীরা এখন নিজের চেয়ে বড় আকারের টি-শার্ট কেনার প্রতি ঝুঁকেছেন। অফিসের পোশাকেও বদল এসেছে। নারীরা বেছে নিচ্ছে ঢিলেঢালা ফরমাল প্যান্ট। এর ওপরে পরছেন কুর্তি বা টপস। সিঙ্গেল কামিজের দাপটে দর্জির কাছে গিয়ে সালোয়ার-কামিজ বানানোর হার কমেছে।

ছাদে উৎসব
অনলাইনে পোশাক কিনে, সেজেগুজে ছাদে উঠে ছবি তোলার অভিজ্ঞতা মাত্র এক বছর পুরোনো। এবারও ঈদের দিন ছাদে গিয়ে ছবি তুলেছেন অনেকে। পুরান ঢাকার সাকরাইন উৎসবের মতো অনেক উৎসবই এখন ছাদকেন্দ্রিক। বারবিকিউ পার্টি করার সময় চলে এসেছে। কয়লা, কাঠি ও ম্যারিনেট করা মাংস নিয়ে অনেকেই চলে যাচ্ছেন ছাদে। লকডাউনের মধ্যে বিকেলবেলার আড্ডাও ছিল ছাদকেন্দ্রিক। 

শ্রাগ
এখন বাইরে বের হওয়ার আগে শহুরে নারীরা গায়ে চাপিয়ে নিচ্ছেন ডেনিমের জ্যাকেট নয়তো শ্রাগ। আগের মতো সালোয়ার-কামিজের ওপর আর সোয়েটার পরার চল নেই। ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন জিনসের প্যান্ট। ওপরের অংশে থাকছে কুর্তি বা টি-শার্ট।

ছেলেদের কাছে হুডি জ্যাকেট বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। হুডির কারণে মাফলার বা কানঢাকা টুপির ব্যবহার এড়ানো যায়। কিছু কিছু জ্যাকেটে হুডি খুলে রাখার ব্যবস্থাও আছে।

এই ডিসেম্বরে যা কিছু করতে পারেন

শীতের রোদে ত্বক পুড়েছে? গোসলের সময় এই প্যাকগুলো ব্যবহারে মিলবে উপকার

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

শীতকালে কলা খাবেন কি না

অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন

মানসিক সমস্যার কারণে চুলকানি হলে কী করবেন

বিলাসিতার স্বাদে মোড়া পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খাবার

২০২৬ সালের জন্য এয়ারবিএনবি-এর পূর্বাভাস

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

শীতকালে শুষ্ক ত্বকের যত্নের সহজ প্রতিকার