মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য এক অনন্য উপহার পবিত্র কোরআন। এটি নিছক কোনো গ্রন্থ নয়—হিদায়াত, রহমত ও জ্ঞানের এক অফুরন্ত ভান্ডার। এই মহাগ্রন্থ মানবজাতির জন্য পথপ্রদর্শক, মানুষকে পথভ্রষ্টের অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসে। এটি রোগাক্রান্ত হৃদয়ের এক মহৌষধ, মানুষকে সঠিক পথের দিশা দেয়। এটি মুমিনের কষ্টিপাথর, সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য তৈরি করে দেয়।
আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমকে এমন এক কিতাব হিসেবে অবতীর্ণ করেছেন, যাতে রয়েছে জান্নাত-জাহান্নামের সুস্পষ্ট বিবরণ, সঠিক পথের দিশা এবং বিশ্বাসীর জন্য সুসংবাদ। কোরআনকে অনুসরণ করার মাধ্যমেই মানুষ সরল ও সঠিক পথের সন্ধান পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এটা ওই কিতাব, যার মধ্যে কোনো সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ নেই; ধর্মভীরুদের জন্য এ গ্রন্থ পথনির্দেশক।’ (সুরা বাকারা: ২)
জীবনের প্রকৃত সফলতা অর্জনে কোরআনের নির্দেশনা মেনে চলা প্রত্যেক মানুষের জন্য আবশ্যক। কোরআনের বিধানাবলি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে কিয়ামতের দিন সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং আনুগত্য করো রাসুলের আর সাবধান হও। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে জেনে রাখো যে আমার রাসুলের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্ট প্রচার।’ (সুরা মায়িদা: ৯২)
কোরআন ব্যক্তিজীবনকে যেমন পরিশুদ্ধ করে, তেমনি একটি জাতিকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ক্ষমতাও দেয়। ইতিহাসের পাতা ওলটালে দেখা যায়, কোরআনের প্রথম আয়াত নাজিল হওয়ার মাত্র ৫০ বছরের মধ্যে মুসলমানেরা তৎকালীন পরাশক্তি রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যকে পরাজিত করে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘মুমিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।’ (সুরা রুম: ৪৭)
কোরআন পৃথিবীতে আলোকোজ্জ্বল সভ্যতার জন্ম দিয়েছে। মানুষকে স্রষ্টার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে দিয়েছে। জাহান্নামের পথ থেকে জান্নাতের পথে নিয়ে এসেছে। সর্বোপরি মানুষকে প্রকৃত মানুষ হতে শিখিয়েছে। তাই বলা যায়, কোরআন মানবজাতির জন্য আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উপহার।