হোম > ইসলাম

মুক্তিযুদ্ধে আলেমদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস

জুবায়ের বিন মামুন

ছবি: সংগৃহীত

দেশপ্রেমের টানে জাতির জন্য যুগে যুগে বীর সেনানীরা আত্মোৎসর্গের খাতায় নাম লিখিয়েছেন; একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধেও তাই ঘটেছিল। সমাজের শিক্ষিত শ্রেণি থেকে শুরু করে দিনমজুর, কৃষক-শ্রমিক, সবাই শ্রেণি-বৈষম্য ভেদাভেদ ভুলে অংশ নিয়েছিলেন এই স্বাধীনতাসংগ্রামে। এ ক্ষেত্রে দেশের আলেম সমাজের ভূমিকাও ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁরাও একটি স্বাধীন সার্বভৌম মানচিত্র অর্জনের সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন।

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী

এ দেশের নির্যাতিত-নিপীড়িত, মেহনতি মানুষের মুক্তির দিশারি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাসে তিনি এক অনবদ্য অবদান রেখেছিলেন। তিনি ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের সয়াধানগড়া পল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। মওলানা ভাসানী সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি ছিলেন, যেটি ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে গঠিত হয়। দেশবরেণ্য এই নেতা ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ

সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার তারুটিয়া (রশিদাবাদ) গ্রামে ১৯০০ সালে জন্মগ্রহণ করেন মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ। তিনি একাধারে অসহযোগ আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, শিক্ষা আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামসহ জাতির প্রতিটি দুর্যোগে আপসহীন নির্ভীক সিপাহির ন্যায় ভূমিকা রেখেছিলেন। এই নেতা ১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট পরপারে পাড়ি জমান।

মাওলানা উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী ও মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (রহ.)

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন দুই ভাই মাওলানা উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী ও মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (রহ.)। একাত্তরের সংগ্রামমুখর দিনগুলোতে তাঁরা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কোরআনভিত্তিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। তাঁরা ‘ইসলামের দৃষ্টিতে ছয় দফা’ বই লিখেও বিতরণ করেন।

মাওলানা অলিউর রহমান

১৯৩২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের আসাম প্রদেশের সিলেট জেলার মইয়ারচর গ্রামে জন্ম হয় মাওলানা অলিউর রহমানের। তিনি পূর্বপাকিস্তানের একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক, অনুবাদক ও তাফসিরকারক ছিলেন। উলামা পার্টির এই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সময় আলবদর বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন।

মাওলানা শামসুল হুদা পাঁচবাগী

শামসুল হুদা পাঁচবাগী (রহ.) ১৮৯৭ সালে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের মাইজবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি স্বাধীন বঙ্গদেশ আন্দোলন এবং জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বঙ্গীয় ও পূর্বপাকিস্তান আইনসভার সদস্যও ছিলেন। ষাটের দশকে তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে নারীদের রক্ষায় কাজ করেছেন। এ ছাড়া যুদ্ধের সময়ে তিনি সংখ্যালঘুদের রক্ষায়ও কাজ করেছেন। তিনি ১৯৭১ সালে অনেক মানুষকে আশ্রয় ও খাদ্য দিয়েছিলেন। তিনি যুবকদের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। মাওলানা শামসুল হুদা পাঁচবাগী ১৯৮৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

এ ছাড়া আরও অসংখ্য আলেম মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং নানাভাবে সহযোগিতা করেন।

তথ্যঋণ: শাকের হোসাইন শিবলি রচিত ‘আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে।’

জুমার নামাজ ছেড়ে দেওয়ার ভয়াবহ পরিণতি

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

মহানবী (সা.)-এর বিজয় উদ্‌যাপন ও আমাদের শিক্ষা

একসঙ্গে দুজন সালাম দিলে উত্তর দেবেন কে?

ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাধীনতাসংগ্রাম

৭০টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশি হাফেজ আনাসের বিশ্বজয়

নবীজি (সা.)-এর আদর্শে জীবন গড়ার উপায়

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

মক্কা-মদিনায় ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা, যা জানা গেল

যে বন্ধুত্ব টিকে থাকে দুনিয়া ও আখিরাতে