পৃথিবীতে অসংখ্য মহাপুরুষ এসেছেন, কিন্তু কারও চরিত্রই এত নিখুঁতভাবে ইতিহাসে খোদাই হয়নি, যতটা হয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর। তাঁর চরিত্রের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল সততা ও সত্যবাদিতা।
আরবের মরুভূমিতে যেখানে মিথ্যা, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা ছিল নিত্যদিনের ব্যাপার; সেখানে একজন মানুষ সারা জীবন সত্যভাষী ও বিশ্বস্ত থেকে পরিচিত হয়েছেন—আল-আমিন, অর্থাৎ ‘অত্যন্ত বিশ্বস্ত।’
রাসুলুল্লাহ (সা.) নবুওয়াতের আগে থেকেই সততার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেন। ব্যবসা ও লেনদেনে তিনি কখনো প্রতারণা করেননি। তাঁর কাছে যত সম্পদ ও আমানত রাখা হতো, তিনি সব নিখুঁতভাবে ফিরিয়ে দিতেন। এমনকি মক্কার মানুষ তাঁর বিরোধী হলেও আমানত রাখার জন্য প্রথমে তাঁর কাছেই ছুটে যেতেন। কারণ, তাঁকে ছাড়া যে আর কাউকে তাঁরা বিশ্বাস করতে পারতেন না।
নবুওয়াতের পর সততার এ শিক্ষাকেই তিনি দাওয়াতের মূল অংশ বানান। তিনি বললেন, ‘সততা মানুষকে সৎকর্মের দিকে নিয়ে যায় আর সৎকর্ম জান্নাতে নিয়ে যায়।’ অন্যদিকে মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায় আর পাপ জাহান্নামের দিকে টেনে নিয়ে যায়।
আজকের সমাজে চারদিকে দুর্নীতি, অসততা, মিথ্যা ও প্রতারণা বেড়ে চলেছে। রাজনীতি থেকে ব্যবসা—প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্যের ঘাটতি স্পষ্ট। অথচ যদি নবীজির সততা আমরা অনুসরণ করতে পারতাম, তাহলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হতো, মানুষের আস্থা ফিরত এবং আধ্যাত্মিক শান্তি আসত।
লেখক: জাহিদ বিন জোবায়ের, শিক্ষার্থী, ইসলামি আইন বিভাগ, জামিয়া শারইয়্যা মালিবাগ ঢাকা