যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেন ছাড়ার জন্য মার্কিন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সেখান থেকে নিজের নাগরিকদের সরিয়ে আনতে বাহিনী পাঠানোটা হবে ‘যুদ্ধের নামান্তর’। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন এই সতর্কতা উচ্চারণ করেন।
এনবিসি নিউজকে বৃহস্পতিবার এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দেন জো বাইডেন। এতে তিনি রাশিয়া, ইউক্রেন সংকট নিয়ে যেমন, তেমনি করোনা মোকাবিলায় মাস্ক পরা নিয়ে দেওয়া নির্দেশনা এবং সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগে মনোনয়ন নিয়েও কথা বলেন।
এনবিসি নিউজের উপস্থাপক লেস্টার হল্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ‘এখনই মার্কিন নাগরিকদের চলে আসা উচিত। এটা কোনো একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে লড়াইয়ের মতো বিষয় নয়। আমরা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সেনাবাহিনীর মুখোমুখি। এটা খুবই ভিন্ন একটা পরিস্থিতি, যা খুব দ্রুততার সঙ্গেই আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে পারে।’
কোন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন থেকে পালাতে চাওয়া মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারে সেনা পাঠাবেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এমন কোনো পরিস্থিতি নেই। আমেরিকান ও রাশিয়ান সেনারা পরস্পরকে গুলি ছড়ার অর্থ হচ্ছে বিশ্বযুদ্ধ। আমরা একেবারেই অন্য রকম এক বিশ্বে এখন বাস করছি।’ বাইডেন বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি সেখানে (ইউক্রেনে) ঢোকার মতো এতটা বোকা হন, তবে আমিও সেখানে না ঢোকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো বুদ্ধিমান। কারণ, এটি সেখানে থাকা মার্কিন নাগরিকদের ভয়াবহ বিপদে ফেলবে।’
এদিকে বাইডেন যখন এই সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন, সেদিনই মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউক্রেনে থাকা মার্কিন নাগরিকদের জন্য একটি সতর্কবার্তা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে তার নাগরিকদের দেশটি থেকে উদ্ধার করে আনা সম্ভব হবে না। এমনকি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে ইউক্রেনে থাকা মার্কিন কনস্যুলেট সেবাও বিঘ্নিত হতে পারে। তখন দেশটি ছাড়তে চাওয়া মার্কিন নাগরিকদের সহায়তা দেওয়া ভীষণ কঠিন হয়ে পড়বে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার ভাষ্যমতে, রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ শক্তি নিয়ে হামলা চালাতে পারে। ট্যাংকসহ ভারী সমরাস্ত্র নিয়ে এ হামলা হতে পারে, যেখানে ট্যাংকগুলো এমনকি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশটির রাজধানী কিয়েভে পৌঁছানোর আশঙ্কাও রয়েছে।