হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন: জানার আছে যা যা

একদিন পরই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মধ্যবর্তী নির্বাচন। দুই বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্পর্কে নিজেদের মনোভাব জানাতে আগামীকাল ৮ নভেম্বর ভোট দেবেন দেশটির জনগণ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চার বছর মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে যেহেতু এই নির্বাচন হয়, তাই একে মধ্যবর্তী নির্বাচন বলা হয়। ক্ষমতা ধরে রাখার পাশাপাশি প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা যাচাইয়েরও অন্যতম মাধ্যম এটি।

মধ্যবর্তী নির্বাচন কি?
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও সংসদীয় ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই নির্বাচন। সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদ- দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত কংগ্রেস। যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন করে কংগ্রেস। এজন্য দুটি কক্ষ আলাদাভাবে কাজ করে। কোন আইনগুলো অনুমোদনের জন্য সিনেটে উঠবে তা নির্ধারণ করে নিম্নকক্ষ।

কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নির্ধারণে দুই বছর পর হয় এই মধ্যবর্তী নির্বাচন।  ডেমোক্র্যাট না রিপাবলিকান- এবার কাদের দখলে থাকছে কংগ্রেস, তা কালকের ভোটে নির্ধারিত হবে। 

কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৫৩৫ জন। এর সিনেটের সদস্য ১০০ জন, বাকিরা প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য দুজন করে সিনেট সদস্য নির্বাচিত করে, যারা সিনেটর হিসেবে পরিচিত এবং ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। প্রতি দুই বছর পরপর সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনে নির্বাচন হয়। এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ১০০টি আসনের মধ্যে ৩৫টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 

জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে প্রতিনিধি পরিষদ 
প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য আছেন ৪৩৫ জন। প্রত্যেক সদস্য তাদের অঙ্গরাজ্যের একটি নির্দিষ্ট ডিস্ট্রিক্টের প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা দুই বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। এই পরিষদের সবগুলো আসনের জন্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে। 

এবার জিতবে কারা
ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি দুই বছর ধরে হাউস ও সিনেট উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। ফলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য আইন পাস করা অনেকটা সহজ ছিল। তবে ডেমোক্র্যাটরা খুব স্বল্প ব্যবধানে কংগ্রেস দখলে রেখেছে, যা মধ্যবর্তী নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করছে। জরিপে দেখা যায়, রিপাবলিকানরা প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে, তবে সিনেট ধরে রাখতে পারে ডেমোক্র্যাটরা। 

সাধারণত, যুক্তরাষ্ট্রে যে দল হোয়াইট হাউসে থাকে, তারা মধ্যবর্তী নির্বাচনে খারাপ ফল করে থাকে। কাজেই রিপাবলিকানরা তাদের আসনসংখ্যা বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জনপ্রিয়তাও অনেকটা কমেছে। তাঁর প্রতি সমর্থন গত আগস্ট মাস থেকেই ৫০ শতাংশের নিচে নেমেছে। ফলে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের জনপ্রিয়তায়ও ভাটা পড়তে পারে। 

গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী ইস্যু
অভিবাসন, অপরাধ এবং জীবনযাত্রার ব্যয়- ২০২২ সালের শুরু থেকেই মনে হয়েছে এই তিন সমস্যা যুক্তরাষ্ট্রের বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। এসব সমস্যা রিপাবলিকানদের ভোটে জয়ী করতে ভূমিকা রাখতে পারে।  

তবে জুনে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল, যখন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট দেশটির গর্ভপাত সুরক্ষা আইন বাতিল করে। নারীদের গর্ভপাতের অধিকারকে সমর্থন করে ডেমোক্র্যাটরা এবং এটিকে অনেক প্রচারণায় কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছে দলটি। 

কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের প্রভাব এখন অনেকটা ম্লান। রিপাবলিকানরা মূল্যস্ফীতি, অভিবাসন ও সহিংস অপরাধের মতো বিষয়ের দিকে মনোযোগ ফেরানোর চেষ্টা করছে ভোটারদের। 

মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব
মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফলের ওপর প্রেসিডেন্টের বাকি মেয়াদ কেমন যাবে তা অনেকাংশে নির্ধারিত হয়। আর এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পেলে বিভিন্ন ইস্যুতে বেকায়দায় পড়বেন জো বাইডেন। কংগ্রেসে অনেক আইন পাসে বাধার সম্মুখীন হতে পারে বাইডেন প্রশাসন। 

ডেমোক্র্যাটরা যদি কংগ্রেসে দখল ধরে রাখতে পারে, তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ে তাঁর পরিকল্পনা চালিয়ে যেতে, সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি প্রসারিত করতে, গর্ভপাতের অধিকার রক্ষা এবং বন্দুক নিয়ন্ত্রণকে কঠোর করতে সক্ষম হবেন। 

আর যদি রিপাবলিকানরা উভয় কক্ষের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তাঁরা বাইডেন প্রশাসনের এজেন্ডাগুলোকে থামিয়ে দিতে পারবে। এ ছাড়া তদন্ত কমিটিগুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে। ফলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটাল হিলে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের হামলার তদন্ত মাঝপথেই আটকে দিতে পারবে। 

এ ছাড়া আগের কিছু ইস্যুতে নতুন তদন্ত শুরু করতে পারে রিপাবলিকানরা- যেমন, চীনের সঙ্গে জো বাইডেনের ছেলের কথিত ব্যবসায়িক লেনদেন বা আফগানিস্তান থেকে তড়িঘড়ি মার্কিন সেনা প্রত্যাহার। এমনকি রিপাবলিকান আধিপত্য ইউক্রেনের জন্য সহায়তা দেওয়ার মতো বাইডেনের বৈদেশিক নীতিকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে। 

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে প্রভাব পড়বে
মধ্যবর্তী নির্বাচন শেষ হলেই সবার নজর যাবে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে কে থাকতে পারে, সে বিষয়ে ইঙ্গিত দিতে পারবে। ২০২০ সালের লড়াইয়ের পুনরাবৃত্তি হতে পারে আগামী নির্বাচনে, কারণ এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প—দুজনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থিতপ্রার্থীদের কর্মকাণ্ড ঠিক করবে, তিনি নির্বাচনে লড়তে রিপাবলিকানদের সমর্থন পাবেন কিনা। কাজেই এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল যে ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে- সে কথা বলাই যায়। 

বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন তামান্না-ই-জাহান

বাইডেনের সময় ইসরায়েলকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র

এপস্টাইন ফাইল: নতুন ছবিতে বিল ক্লিনটন ও বিল গেটসসহ প্রভাবশালী অনেকে

লাতিন আমেরিকাজুড়ে শিগগির ‘স্থল অভিযান’ শুরু করবেন ট্রাম্প

বড় কোম্পানি থেকে ‘ভারতীয় নির্মূলের’ আহ্বান মার্কিন জরিপকারীর, সমালোচনার ঝড়

গর্ভে সন্তান আছে কি না পরীক্ষা করে ভিসা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই ভেনেজুয়েলার ন্যাশনাল গার্ডের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবেদন প্রকাশ

ধনীদের মার্কিন নাগরিকত্ব দেবে ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’, মূল্য ১০ লাখ ডলার

মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যয়ের জন্য রেকর্ড ৯০১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট

সমুদ্রে মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে প্রশ্নের মুখে যুক্তরাষ্ট্র