হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

অ্যাপস্টেইন ফাইল প্রকাশের অনুমতি, বিলে সই করলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রয়াত যৌন অপরাধী জেফরি অ্যাপস্টেইনকে ঘিরে থাকা ফাইলগুলো প্রকাশের নির্দেশ দিয়ে তিনি একটি বিল সই করেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প জানান, অ্যাপস্টেইনের অপরাধ আর রাজনীতি, ব্যবসা ও বিনোদন অঙ্গনের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের ব্যাপ্তি উন্মুক্ত করার দাবিতে মাসব্যাপী চাপের পর তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, প্রশাসন ‘আইন মেনে চলবে’ এবং এই মামলায় ‘সর্বোচ্চ স্বচ্ছতাকে উৎসাহিত করবে।’

এই সপ্তাহে কংগ্রেসে দুই পক্ষেরই বিপুল সমর্থনে পাস হওয়া অ্যাপস্টেইন ফাইলস ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে ৩০ দিনের মধ্যে অ্যাপস্টেইন সংক্রান্ত সব নন-ক্ল্যাসিফায়েড বা অশ্রেণিভুক্ত নথি ‘সার্চযোগ্য ও ডাউনলোডযোগ্য’ ফরম্যাটে প্রকাশ করতে হবে। আইনে শিশুদের সঙ্গে যৌন অপরাধ সংশ্লিষ্ট উপাদান, ভুক্তভোগীদের পরিচয়, চলমান তদন্তের তথ্য এবং ‘জাতীয় প্রতিরক্ষা বা পররাষ্ট্রনীতির’ সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো গোপন রাখার বিধান রয়েছে।

তবে আইনটি আরও স্পষ্ট করে বলছে, ‘লজ্জা, সুনামের ক্ষতি বা রাজনৈতিক স্পর্শকাতরতার’ কারণে কোনো নথি যেন আটকে রাখা না হয়, তা সে সরকারি কর্মকর্তা, প্রভাবশালী ব্যক্তি বা বিদেশি কূটনীতিক যে-ই হোন না কেন।

অ্যাপস্টেইনকে ঘিরে বহু নথি ইতিমধ্যে প্রকাশিত হলেও চলতি বছরের শুরুর দিকে অ্যাপস্টেইন-সম্পর্কিত একটি মামলার বিচারক জানিয়েছেন, মোট নথির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ পৃষ্ঠা। অ্যাপস্টেইনের রাজনীতিবিদ, ধনকুবের ও অভিজাত মহলের বিস্তৃত পরিচিতি, বিপুল সম্পদ আর রহস্যঘেরা অতীত বহু বছর ধরে জল্পনা-কল্পনা আর ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে উসকে দিয়েছে।

ফাইল প্রকাশের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে গিয়ে ট্রাম্প, যিনি এত দিন এই বিষয়ে স্বচ্ছতার দাবিকে এড়িয়ে গিয়েছিলেন, এবার অ্যাপস্টেইন বিতর্ককে ডেমোক্র্যাটদের জন্য রিপাবলিকানদের তুলনায় বড় রাজনৈতিক বোঝা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প অ্যাপস্টেইনকে ‘আজীবন’ ডেমোক্র্যাট বলে উল্লেখ করেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও সাবেক ট্রেজারি সেক্রেটারি লরেন্স সামার্সসহ নজরে আসা ডেমোক্র্যাট নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ককে স্মরণ করিয়ে দেন। সামার্স বুধবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কারণ, অ্যাপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত পাওয়া কিছু ই-মেইল প্রকাশ পেয়েছে।

ক্লিনটন কিংবা সামার্স কেউই অ্যাপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে কোনো অপরাধে জড়িত বলে অভিযুক্ত নন। ২০১৯ সালে যৌন পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর নিউইয়র্কের একটি কারাগারে অ্যাপস্টেইনের মৃত্যু হয়। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘সম্ভবত এই ডেমোক্র্যাটদের প্রকৃত চেহারা, আর অ্যাপস্টেইনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক শিগগির প্রকাশ পাবে। কারণ, আমি মাত্রই অ্যাপস্টেইন ফাইলস প্রকাশের বিলটিতে সই করেছি!’

তবে অ্যাপস্টেইনের পরিচিতি ছিল দুই দলেই। ডেমোক্র্যাটের পাশাপাশি রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। ট্রাম্প নিজেও নব্বইয়ের দশক আর একুশ শতকের শুরুর দিকে অ্যাপস্টেইনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং এ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের প্রকাশ করা কিছু ই-মেইলে তাঁর নাম বারবার উঠে এসেছে।

২০১১ সালের এক ই-মেইলে অ্যাপস্টেইন তাঁর সাবেক প্রেমিকা ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলকে লিখেছিলেন, ট্রাম্প তাঁর বাড়িতে একটি মানব পাচারের শিকার তরুণীর সঙ্গে ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা’ সময় কাটিয়েছেন। ট্রাম্প এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, অ্যাপস্টেইনের অপরাধ সম্পর্কে তাঁর কোনো জানাশোনা ছিল না। তিনি কখনোই কোনো ভুল করেননি।

ট্রাম্প ঘোষণা দেওয়ার পর সমালোচকেরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে তাঁর প্রশাসন সত্যিই আইনের নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করবে কি না। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট সিনেটর অ্যাডাম শিফ বলেছেন, তিনি ‘একদমই নিশ্চিত নন’ যে আইনটি যেভাবে লেখা হয়েছে, সেভাবেই বাস্তবায়িত হবে। শিফ বলেন, ‘অতীত যদি ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়, তাহলে আমরা আরও বিলম্ব, আরও গোপনীয়তা আর গোপনীয়তার অদ্ভুত ব্যাখ্যা দেখব।’

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বললেন ট্রাম্প

আমি আগের তুলনায় এখন আরও বেশি প্রাণবন্ত—বলেই মন্ত্রিসভায় ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প

বাইডেনের ‘অটোপেনে’ সই করা সব নথি বাতিল করছেন ট্রাম্প

গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে শ্রম আইন লঙ্ঘন: ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা দিচ্ছে স্টারবাকস

ট্রাম্পের এমআরআই পরীক্ষার রিপোর্টে যা আছে

‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়’—মাদুরোকে ট্রাম্পের আলটিমেটাম

আমার মাথায় সমস্যা নেই, বিশ্বাস না হলে এমআরআই রিপোর্ট দেখাব—সাংবাদিকদের ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে হোয়াইট হাউসে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ট্রাম্প