হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করছে কাতার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ইডাহো বিমানঘাঁটিতে এফ-১৫ ই। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং সামরিক অংশীদারত্ব জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ গতকাল শুক্রবার জানিয়েছেন, কাতারের বিমানবাহিনী ইডাহোর মাউন্টেন হোম বিমানঘাঁটিতে একটি নতুন অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ অবকাঠামো গড়ে তোলার অনুমতি পাচ্ছে। এই স্থাপনায় কাতারের নতুন কেনা এফ-১৫ যুদ্ধবিমান এবং পাইলটরা অবস্থান করবেন এবং মার্কিন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যৌথ প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন।

পেন্টাগনে কাতারের প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাউদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানির সঙ্গে বৈঠকের পর হেগসেথ এই চুক্তিকে ‘অংশীদারত্বের আরও একটি দৃষ্টান্ত’ হিসেবে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এ স্থানটি কাতারি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান এবং পাইলটদের একটি কন্টিনজেন্টকে হোস্ট করবে, যা আমাদের সম্মিলিত প্রশিক্ষণকে আরও উন্নত করবে এবং আমাদের সামরিক সক্ষমতা ও আন্তপরিচালনা সক্ষমতা, অর্থাৎ যৌথভাবে কাজ করার সক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়াবে।’ তিনি কাতারি মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘এক্সেলেন্সি, আপনি আমাদের ওপর আস্থা রাখতে পারেন।’

এই গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটি এমন এক সময়ে ঘোষিত হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র-কাতার সম্পর্ক নতুন করে সংজ্ঞায়িত হচ্ছে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ন্যাটোবহির্ভূত আরব মিত্র হিসেবে কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যে তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক অভিযানে কাতার সমর্থন জুগিয়েছে, বিশেষ করে জুনে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার সময়। একই সঙ্গে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের আলোচনায় কাতার ‘উল্লেখযোগ্য ভূমিকার’ জন্য মার্কিন প্রশাসনের প্রশংসা পেয়েছে।

যদিও এই ঘোষণার কয়েক দিন আগে দোহায় বসবাসরত হামাস কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েল বোমা হামলা চালিয়েছিল। অবশ্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এর জন্য পরে ক্ষমাও চেয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইডাহোতে এই সামরিক স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার ফল নয়। মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, এই চুক্তিটি জার্মানি এবং সিঙ্গাপুরের মতো অন্যান্য সহযোগী দেশের সঙ্গে বিমানবাহিনীর গত কয়েক দশকের নিয়মিত একটি কার্যক্রমের অংশ।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদ কাতারে অবস্থিত।

এই স্থাপনাকে সামরিক পরিভাষায় ‘বেডডাউন’ অপারেশন বলা হয়। মূলত একটি প্রশিক্ষণ স্কোয়াড্রনের পরিচালনার জন্য স্থায়ী অবকাঠামো বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহার করা হয়। এই পরিকল্পনার প্রাথমিক কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে, যখন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় ছিলেন। সে সময় মাউন্টেন হোম বিমানঘাঁটির পরিবেশগত মূল্যায়নের ফলাফলে এই বেডডাউনের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছিল।

এই স্থাপনায় স্থায়ীভাবে নিয়োজিত ১২টি এফ-১৫ কিউএ যুদ্ধবিমান, সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম এবং প্রায় ৩০০ অতিরিক্ত কাতারি ও মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্মী থাকবেন।

এই স্থাপনা নির্মাণে প্রয়োজনীয় অর্থ কাতার বৈদেশিক সামরিক বিক্রয় কর্মসূচির মাধ্যমে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে সরবরাহ করবে। এই চুক্তির মাধ্যমে কাতার শুধু সরঞ্জাম কেনে না; বরং প্রশিক্ষণ এবং পরিকাঠামো নির্মাণেও অর্থায়ন করে।

এই ঘাঁটির কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে ২০২৪ অর্থবছরের শুরু থেকে অন্তত ১০ বছর ধরে চলার কথা রয়েছে। তবে প্রয়োজনে বাড়ানো যেতে পারে।

এই বেডডাউন স্থাপনা কাতারি পাইলটদের প্রশিক্ষণ, ব্রিফিং এবং বিমান পরিচালনার সময়সূচি নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় স্থান ও লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে। মার্কিন সামরিক বাহিনী এই নির্মাণকাজের জন্য স্থানীয় শ্রমিক নিয়োগ করবে। এতে ঘাঁটি সংলগ্ন অধিবাসীদের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে এই চুক্তি ঘোষণার পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং কট্টর ডানপন্থী কর্মী লরা লুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এই চুক্তিকে ‘জঘন্য কাজ’ এবং ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে বর্ণনা করেছেন।

এই সমালোচনার মুখে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ দ্রুত এক্সে একটি পোস্ট করে পরিস্থিতি স্পষ্ট করার চেষ্টা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ স্থাপনাটি কোনোভাবেই কাতারের মালিকানাধীন স্থায়ী ঘাঁটি নয়, বরং এটি এফ-১৫ কিউএ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে যুক্ত একটি সহযোগিতামূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম মাত্র।

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বললেন ট্রাম্প

আমি আগের তুলনায় এখন আরও বেশি প্রাণবন্ত—বলেই মন্ত্রিসভায় ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প

বাইডেনের ‘অটোপেনে’ সই করা সব নথি বাতিল করছেন ট্রাম্প

গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে শ্রম আইন লঙ্ঘন: ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা দিচ্ছে স্টারবাকস

ট্রাম্পের এমআরআই পরীক্ষার রিপোর্টে যা আছে

‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়’—মাদুরোকে ট্রাম্পের আলটিমেটাম

আমার মাথায় সমস্যা নেই, বিশ্বাস না হলে এমআরআই রিপোর্ট দেখাব—সাংবাদিকদের ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে হোয়াইট হাউসে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ট্রাম্প