হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজার এক বাড়িতেই যেভাবে থাকছেন ৯০ জন

৩৮ বছর বয়সী ইব্রাহিম আলাঘা এবং তাঁর স্ত্রী হামিদা বসবাস করেন আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরে। ফিলিস্তিনি হলেও দুজনেরই আইরিশ নাগরিকত্ব আছে। হামাস-ইসরায়েল সংঘর্ষ শুরুর আগে তিন সন্তানকে নিয়ে এই দম্পতি ছুটি কাটাতে গাজায় গিয়েছিলেন। গাজার দক্ষিণ অংশে অবস্থিত খান ইউনিস এলাকায় তাঁদের অনেক আত্মীয়স্বজন থাকেন।

মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বর্তমানে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খান ইউনিসে আটকা পড়েছে ইব্রাহিমের পরিবার। মুহুর্মুহু বোমা হামলায় কেঁপে উঠছে শহর। কিন্তু পালানোর কোনো পথ নেই।

এ অবস্থায় সবচেয়ে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে ইব্রাহিমের তিন সন্তান। তাদের মধ্যে সবার বড় জনের বয়স ৮ বছর। বাকি দুজন যথাক্রমে ৪ ও ৩ বছরের। 

যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে সন্তানদের নিরাপদ রাখতেই এই মুহূর্তে মাথা ঘামাতে হচ্ছে ইব্রাহিম ও তাঁর স্ত্রীকে। ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যেও সন্তানদের সারাক্ষণ হাসি-খুশি রাখার চেষ্টা করছেন তাঁরা। রাতভর বোমার আওয়াজে কিছুক্ষণ পর পর ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তাদের। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ৮ বছর বয়সী বড় ছেলে সামির ওপর। যুদ্ধের বিষয়টি সে বুঝে গেছে। 

আরেকটি বিষয় হলো—ছোট্ট একটি বাড়ির মধ্যেই এখন গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে ইব্রাহিম দম্পতি ও তাঁদের সন্তানদের। কারণ গাজার উত্তর অংশ থেকে পালিয়ে আসা তাঁদের অনেক আত্মীয়স্বজন এখন বাড়িটিতে অবস্থান নিয়েছে। বাড়ির কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—যুদ্ধের মধ্যে বিপদাপন্ন হয়ে যে-ই আসুক, কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। 

আজ মঙ্গলবার হিসেব করে দেখা গেছে, বাড়িটিতে ৯০ জন মানুষ এখন অবস্থান করছে। অবস্থা এমন যে—এতগুলো মানুষ একসঙ্গে ঘুমাবে সেই উপায় নাই। তাই বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে পালাক্রমে তারা ঘুমাচ্ছে। এভাবে আসলে কারোরই ভালো ঘুম হচ্ছে না। 

পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে একটি আইরিশ রেডিওকে ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা শুধু টিকে থাকার চেষ্টা করছি।’ 

তিনি জানান, এতগুলো মানুষের খাবার সংগ্রহ করাও খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। বাড়িতে থাকা প্রাপ্ত বয়স্করা প্রতিদিনই বাইরে গিয়ে দেখতে চেষ্টা করেন, কোথাও টিনজাত খাবার বিতরণ করা হচ্ছে কি-না। দিনে এক বেলা খেয়ে না খেয়ে তাঁরা সময় পাড়ি দিচ্ছেন। 

খাদ্য সংকটের মধ্যে শিশুদের টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা সব সময়ই খাবার আর পানি চাইছে। এ অবস্থায় খাদ্য বণ্টনের ক্ষেত্রে শিশুদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। 

ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা বড়রা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে পারি। কিন্তু যখন বাচ্চারা খাবার চায়—তাদের না করি কীভাবে?’ 

বাড়িটিতে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং একজন বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীও আছেন। এই মুহূর্তে যদি কারও জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তবে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে, এমন নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে। 

ইব্রাহিম বলেন, ‘দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। কোনো কারণ ছাড়াই এখানে নিরীহ মানুষেরা মারা যাচ্ছে।’

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন