দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা দেশের পুলিশ মন্ত্রীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। বিভিন্ন অপরাধী সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তেরও ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রামাফোসার এই পদক্ষেপ কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা জেনারেল নাহলানহলা মখওয়ানাজির অভিযোগের পর এল। মখওয়ানাজি অভিযোগ করেছেন, সেনজো মাচুনু এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্যাড্রাক সিবিয়া সংবেদনশীল তদন্তে হস্তক্ষেপ করেছেন।
রামাফোসা জানিয়েছেন, এই তদন্তের নেতৃত্বে থাকবেন একজন বিচারক। সেই সঙ্গে ফিরোজ কাচালিয়াকে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছেন তিনি।
গতকাল টিভিতে প্রচারিত এক ভাষণে রামাফোসা বলেন, ‘কমিশন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বর্তমান বা প্রাক্তন সিনিয়র কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করবে, যারা কথিত অপরাধমূলক কার্যকলাপে সহায়তা বা প্ররোচনা দিয়ে থাকতে পারেন, বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য বা অভ্যন্তরীণ সতর্কবার্তায় কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছেন, অথবা সিন্ডিকেটের কার্যক্রম থেকে আর্থিকভাবে বা রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন।’
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা মখওয়ানাজি আরও অভিযোগ করেন, মাচুনু এবং সিবিয়া প্রদেশের বারবার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ অপরাধ ইউনিটকে ভেঙে দিয়েছেন। এই ইউনিটটি প্রকাশ করেছিল, অপরাধী সিন্ডিকেটগুলো এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ইউনিটের তদন্তে দেখা গেছে কিছু রাজনীতিবিদ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, এসএপিএস (দক্ষিণ আফ্রিকান পুলিশ সার্ভিস), মেট্রো পুলিশ এবং সংশোধনমূলক পরিষেবা, প্রসিকিউটর, বিচার বিভাগ ‘মাদক কার্টেল এবং ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত’ হচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, এই তদন্তে দেশের কিছু অপরাধ তদন্ত ও বিচার বিভাগীয় সংস্থা, যার মধ্যে ন্যাশনাল প্রসিকিউটিং অথোরিটি এবং স্টেট সিকিউরিটি এজেন্সিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বেশির ভাগ বিরোধী দল রোববার রামাফোসার সমালোচনা করে বলেছে, তিনি অভিযুক্ত মন্ত্রী মাচুনুকে সরাসরি বরখাস্ত না করে ছুটিতে পাঠিয়েছেন। বিরোধী দল এমকে পার্টির মুখপাত্র নাহলামুলো এনধলেলা বলেন, ‘এটি দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষকে আস্থা অর্জনের এবং এই সমস্যাগুলো দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করার একটি সুযোগ ছিল। কিন্তু তিনি একটি তদন্ত কমিশন ডেকেছেন এবং আশা করছেন যে, মানুষ প্রতিদিন মারা গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণ ধৈর্য ধরবে।’