হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার আকাশে ঘুড়ি ওড়াচ্ছে শিশুরা 

মিশর থেকে গাজা উপত্যকাকে আলাদা করেছে কংক্রিট ও ইস্পাতের সীমানাপ্রাচীর। সেই প্রাচীর থেকে কয়েক মিটার দূরেই যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার আকাশে কাগজের ঘুড়ি ওড়ায় ১১ বছর বয়সী মালাক আয়াদ। ভয়াবহ যুদ্ধের মাঝে এমন ঘটনা আসলে কিসের বার্তা দেয়? 

ফিলিস্তিনি মেয়ে মালাক আয়াদ ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, ‘প্রতিদিন আমি আমার ভাই এবং কাজিনদের সঙ্গে মিশরীয় সীমান্তের পাশে ঘুড়ি ওড়াই। গাজা শহর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে মেয়েটির পরিবার। তাঁরা এখন গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহতে অবস্থান করছে। 

আলতো করে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় মেয়েটি আরও বলেন, ‘যখন আমি ঘুড়ি ওড়াই তখন মুক্ত ও নিরাপদ বোধ করি।’ মেয়েটি নিজের ঘুড়িকে ‘বাটারফ্লাই’ বলে ডাকে। চিক্কণ সাদা সুতোয় বাধা ঘুড়িটি থেকে থেকেই উড়ে মিশর সীমান্তের ওপারে উঁকি দিচ্ছিল। 

এ সময় মেয়েটির চাচাতো ভাই এবং বন্ধুরা সীমান্ত প্রাচীর বরাবর ছুটছিল নিজেদের ঘুড়িগুলোকে আকাশে উড়ানোর জন্য। কিন্তু খানিক দূরেই একটি বিকট বিস্ফোরণ তাঁদের ঘুড়ি ওড়ানোর দৌড় থামিয়ে দেয়। 

মালকের চাচা মোহাম্মদ আয়াদ (২৪) তাঁদের সতর্ক করে বলেন, ‘দ্রুতই (ইসরায়েলি) বোমাবর্ষণ এদিকে এগিয়ে আসছে। এলাকা ছাড়ো।’ 

মালাক চাচার কথামতো দ্রুত ঘুড়ি নামিয়ে ভাঁজ করে। তারপর একটি তাঁবুতে ফিরে যায়, যেখানে তাঁর পরিবার নিকটবর্তী খির এলাকায় অবস্থান করছে। 

মালাক তখন ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলে, ‘খেলার সময় শেষ। যখন বিমান হামলা শুরু হয় তখন আমরা বাড়ি ফিরে যাই।’ 

ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুসারে, ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার মাধ্যমে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যেখানে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ১৬০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক লোক। 

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক অভিযান শুরু করে। এতে এ পর্যন্ত অন্তত ৩২ হাজার ৭৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। 

যুদ্ধের ভয়াবহতা মালাককে ঘিরে ধরা সত্ত্বেও সে ঘুড়ি উড়াতে ভালোবাসে এবং ৭ অক্টোবরের আগের জীবনে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। 

ফিলিস্তিনি পতাকার ব্রেসলেট পরা মেয়ে মালাক বলে, ‘আমার ঘুড়ি প্রতিদিন মিশরে উড়ে যায়। আর আমরা এখানে গাজায় আটকা পড়ে থাকি। আমি জানি না আমরা কখন বাড়ি ফিরতে পারব কি না।’ মেয়েটির মা তাকে বলেছে, তার স্কুল ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ধ্বংস করে দিয়েছে। 

গাজা শহর থেকেও বাস্তুচ্যুত হওয়া হাইথাম আবু আজওয়া (৩৪) শিশুদের ঘুড়ি ওড়ানো দেখে বলেন, ‘ওদের ঘুড়ি ওড়ানো আমার শৈশবের কথা মনে করিয়ে দেয়।’ 

তিনিও স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে (৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ এবং সাত মাস বয়সী আদম) নিয়ে রাফাহতে একটি তাঁবুতে থাকেন। 

নিজের ছেলে মোহাম্মদকে একটি ঘুড়ি উড়াতে সাহায্য করার সময় তিনি বলেন, ‘ঘুড়ি ওড়ানো নিজেকে নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। আমাদের দুঃখ ও বেদনা ভুলে থাকার ‘ভালো’ জায়গা হয়তো এখন এই মিসরের সীমান্ত এলাকাই। শরণার্থীশিবিরে আপনি মুক্ত বা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারবেন না।’

তাই একদল শিশু প্রতিদিন বিকেলে পরিবার নিয়ে মিশর সীমান্ত এলাকায় ঘুড়ি ওড়াতে আসে। কেউ কেউ নজরদারি টাওয়ারে মিশরীয় সৈন্যদের সঙ্গে গল্প-গুজবও করে। 

এমন সময় মালাকের ঘুড়িটি মিসরীয় ওয়াচ টাওয়ারের পাশ দিয়ে উড়ে যায়, তখন একজন মিসরীয় সৈন্য মেয়েটিকে বলে, ‘শাবাশ, রাজকুমারী।’

গাজায় হামাসবিরোধী ইসরায়েলি প্রক্সি গোষ্ঠীর নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত, কে তিনি

গাজায় যুদ্ধবিরতি খুব ভালোভাবে চলছে, দ্বিতীয় ধাপ শুরু শিগগির: ট্রাম্প

মার্কিন মধ্যস্থতায় ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় লেবানন-ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের নেলসন ম্যান্ডেলা: বারঘৌতির মুক্তির দাবিতে সোচ্চার দুই শতাধিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব

‘সর্বত্র ভূত দেখে’ যত্রতত্র ‘বোমা ফেলছেন বিবি’, লাগাম টানতে ব্যর্থ যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই একমাত্র সমাধান—পোপ

দুর্নীতির মামলায় প্রেসিডেন্টের কাছে নেতানিয়াহুর ক্ষমা প্রার্থনা

গাজার পুলিশ বাহিনী গঠনে হাজারো ফিলিস্তিনিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মিসর

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে, নিহত ৭০ হাজার ছাড়াল

সংঘবদ্ধ নির্যাতন ‘কার্যত’ ইসরায়েলের রাষ্ট্রনীতি, কুকুর হামলা, যৌন নির্যাতনের চিত্র জাতিসংঘের প্রতিবেদনে