হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

শিশুদের হাসি কেড়ে নিল যুদ্ধ

গাজা উপত্যকায় শিশুরা কতগুলো ইসরায়েলি হামলা সামলেছে, এই হিসাবে তাদের বয়স নির্ণয় করা হয়। অঞ্চলটির মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরই বয়স ১৮ বছরের নিচে। সংখ্যার হিসাবে এটি ২৩ লাখ। আর ইসরায়েলের এবারের হামলাকে গত ১৫ বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলা হচ্ছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার স্পষ্ট প্রভাব পড়ছে গাজার শিশুদের মনস্তত্ত্বের ওপর। মানসিক আঘাতের ফলে অঞ্চলটির প্রতি পাঁচ শিশুর মধ্যে চারজনই বিষণ্নতা, শোক ও ভয়ের মতো নেতিবাচক অনুভূতির সঙ্গে বসবাস করছে। গত বছরের একটি প্রতিবেদনে এ দাবি করে শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

সংস্থাটি আরও জানায়, এর ফলে গাজার অর্ধেকেরও বেশি শিশু আত্মহত্যার চিন্তা করে। বারবার নিজেদের চোখের সামনে অন্য শিশুদের মৃত্যু দেখার ফলে প্রতিনিয়ত মানসিক ট্রমার সঙ্গে লড়াই করতে হয় তাদের।

গতকাল শনিবার পর্যন্ত গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলার সাত দিন অতিবাহিত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে অঞ্চলটিতে অন্তত ২ হাজার ২১৫ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের মধ্যে ৭২৪ জনই শিশু। শুধু তাই নয়, ৮ হাজার ৭১৪ জন আহত ফিলিস্তিনির মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু রয়েছে।

শিশুদের কাছে যুদ্ধের ভয়াবহতা লুকানো সম্ভব না হলেও সন্তানদের সামলাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন মা-বাবারা। এমনই একজন মা সামাহ জাবের। তাঁর চার সন্তান রয়েছে। তবে বড় ছেলে কুয়াসিকে (১৩) নিয়ে বেশ চিন্তিত তিনি।

সামাহ জাবের বলেন, ‘আজকাল খুব আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে কুয়াসি। অযথাই অন্য বাচ্চাদের মারধর করে সে। এ ছাড়া জোরে কোনো আওয়াজ হলেই লাফ দিয়ে ওঠে। এমনকি কেউ জোরে কথা বললেও কুয়াসি সেটা সহ্য করতে পারছে না। আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি, এই যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হবে।’

জাবের যতবার পারে কুয়াসিকে জড়িয়ে ধরে। তাকে কাছে বসিয়ে আদর করে। যুদ্ধ শেষ হলে তারা কী কী করবে, এগুলোর পরিকল্পনার কথা শোনায় কুয়াসিকে। জাবের জানান, এমন আচরণ কুয়াসিকে এ সময়টাকে জয় করতে সাহায্য করবে এবং এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জোগাবে।

গাজা সিটিতে বাস করা মানাল সালেম নামের তিন সন্তানের এক মা জানান, তাঁর স্বামী একজন চিকিৎসক। কাজের জন্য প্রায় রাতেই বাসায় ফিরতে পারেন না তিনি। এ সময় শিশুরা বেশ চিন্তিত থাকে। তাঁদের ছোট মেয়ে মাইয়ের (৬) ধারণা, তার বাবা কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মারা গেছেন, তাই বাসায় ফিরছেন না। এ সময় মাইকে খুব চিন্তিত আর বিষণ্ন দেখায়।

রাফা শহরের বাসিন্দা ও এক মা আহলাম ওয়াদি (৩০) বলেন, তাঁর ১০ বছর বয়সী ছেলে নিজের হাত দিয়ে কান ঢেকে ঘুমায়। না হলে সে ঘুমাতে পারে না। ওয়াদি তাঁর সন্তানদের নিজের ছেলেবেলার গল্প শোনান। তিনি বলেন, ‘আমিও আমার ছেলেবেলায় এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে গেছি। এজন্যই এখন আর ভয় পাই না।’

এসব শিশুর কেউ কেউ তাদের নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। বাধ্য হয়ে পরিবারের সঙ্গে বসতভিটা ছেড়েছে। ইসরায়েলের হামলায় ঘর হারিয়ে জাতিসংঘের একটি স্কুলে আশ্রয় নেন নাইমা ফারস নামের এক মা। তিনি বলেন, ‘হামলার দ্বিতীয় রাত থেকেই ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আমার  সন্তানেরা।’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা