ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইযেহ-তে গত শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের মুখে আত্মহত্যা করেছেন আবল করকর নামে এক প্রতিবাদকারী। ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, অভিযানের মুহূর্তে ইনস্টাগ্রাম লাইভে সঙ্গে থাকা একটি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নিজের শরীরে গুলি করেন ওই যুবক।
শহরের সাবেক রাজনৈতিক বন্দী এবং অধিকারকর্মী ফোয়াদ চোওবিন জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা করকরের লুকিয়ে থাকার স্থান ঘিরে গুলি ছুড়তে থাকলে তিনি নিজেই নিজের জীবন শেষ করে দেন।
প্রতিবাদী করকর গত দুই বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু গত শনিবার নিরাপত্তা বাহিনী তাঁর আশ্রয়ে হামলা চালায়। এ সময় পুরো ঘটনাটি ইনস্টাগ্রামে লাইভ সম্প্রচার করেন তিনি।
ভিডিওতে দেখা যায়—বন্দুকধারী বাহিনীর সামনে কুরকুর বারবার আত্মসমর্পণ করার কথা বলেছেন। তারপরও বাহিনী গুলি চালিয়ে যায়।
শেষ মুহূর্তে করকর বলেন, ‘আমার আর কোনো উপায় নেই। বিদায়, ইরান।’ এরপর তিনি নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন।
অধিকারকর্মী চোওবিন জানিয়েছেন, করকরের সঙ্গে আরও তিনজন ছিলেন। তাঁরা আত্মসমর্পণ করলেও নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়ে যায় এবং ঘরের ভেতর একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
ইযেহ-এর পুলিশ প্রধানও নিশ্চিত করেছেন, করকর নিহত হয়েছেন এবং তাঁর তিন সহযোগী আহত অবস্থায় আটক হয়েছেন।
২০২২ সালে ইরানে নারী আন্দোলনের সময় ইযেহ শহর ছিল ব্যাপক প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু। তখন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অনেক বিক্ষোভকারী নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চোওবিনের কিশোর ভাগনে আরতিন রহমানি এবং কিয়ান পিরফালাক নামে ৯ বছর বয়সী এক শিশুও ছিল।
ইরানের সরকার কিয়ান পিরফালাক হত্যার জন্য করকরকে দায়ী করে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তবে কিয়ানের পরিবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের ছেলে সরকারি বাহিনীর গুলিতেই নিহত হয়েছে।
সরকারি বিবৃতির বিপরীতে, কিয়ানের মা জায়নাব মোলাই-রাদ বলেছেন, ‘আমাদের গাড়িতে গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।’ তিনি করকরের মায়ের সঙ্গে হাত ধরে একটি ছবিও প্রকাশ করেছেন। গুলিতে আহত হয়েছিলেন কিয়ানের বাবা মায়সাম পিরফালাকও। তিনি আদালতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন।