ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে ‘মিলেমিশে’ থাকতে চাইলে, এখনই ফিলিস্তিনিদের সহায়তা শুরু করতে হবে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
গতকাল রোববার রাতে সম্প্রচারিত মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানে কুশনার বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি নেতৃত্বের কাছে সবচেয়ে বড় যে বার্তাটি পৌঁছে দিতে চেয়েছি, তা হলো—যুদ্ধ শেষ হয়েছে। এখন যদি ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তর অঞ্চলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চায়, তাহলে তাদের এমন উপায় খুঁজে বের করতে হবে যাতে ফিলিস্তিনিরা উন্নতি করতে পারে এবং ভালোভাবে বাঁচতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, তিনি ও উইটকফ ইসরায়েলকে এই বার্তা দেওয়া মাত্রই শুরু করেছেন। ফিলিস্তিনি জনগণকে ‘উন্নতি’ করতে দেওয়া বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে কুশনার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে এমন এক পরিস্থিতি তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে যেখানে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা যৌথ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগের মধ্যে থেকে পাশাপাশি টেকসইভাবে বসবাস করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে একে যা-ই বলা হোক না কেন, সেটি ফিলিস্তিনিরাই নিজেরা ঠিক করবে।’ এই মন্তব্যটি তিনি করেন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে। সিবিএসের সঙ্গে এই সাক্ষাৎকারটি ছিল যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শুরু হওয়ার পর কুশনার ও উইটকফের দেওয়া প্রথম দীর্ঘ আলাপ। এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্য দিয়েই গাজায় যুদ্ধ কার্যত থেমে যায় এবং জীবিত সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। হামাস মূলত এই দুজনের কাছেই যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা দিয়েছিল।
তবে সোমবার পর্যন্ত হামাস এখনো ফেরত দেয়নি গাজায় থাকা ২৮ জন মৃত জিম্মির মধ্যে ১৬ জনের মরদেহ। হামাসের দাবি, গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে তারা এখনই বাকি মরদেহগুলো খুঁজে বের করতে পারছে না। তবে ইসরায়েল বলছে, এটি হামাসের ‘মিথ্যা অজুহাত।’ তাদের হাতে অধিকাংশ মরদেহই রয়েছে, চাইলে তারা যেকোনো সময় তা হস্তান্তর করতে পারে।
হামাস কি সত্যিই ভালোভাবে মৃতদেহগুলো খুঁজছে—এমন প্রশ্নে কুশনার বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে আমরা এখন পর্যন্ত যেটা জেনেছি, তাতে মনে হচ্ছে তারা চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে। তবে এটি যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে, কিন্তু আপাতত আমরা তাদের চুক্তি রক্ষার চেষ্টা করতে দেখছি।’