গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। স্বাধীন তদন্ত শেষে এক প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো এ কথা বলল জাতিসংঘ। আজ মঙ্গলবার ৭২ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন, আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান নাভি পিল্লে আল-জাজিরাকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ইস্যাক হারজোগ, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োাভ গ্যালান্তের বিবৃতি ও দেওয়া নির্দেশের ভিত্তিতে তদন্ত করা হয়েছি। এই তিনজন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হওয়ায়, আইনের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রকে দায়ী ধরা হয়। তাই আমরা বলছি, গণহত্যা করেছে রাষ্ট্র ইসরায়েল।’
এই প্রতিবেদনকে জাতিসংঘের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইসরায়েল গাজায় অন্তত ‘চারটি গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ চালিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কর্মকাণ্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজায় ফিলিস্তিনিদের হত্যা, তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে গুরুতর ক্ষতি করা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন জীবনযাত্রার শর্ত আরোপ করা যা পুরো বা আংশিকভাবে তাদের শারীরিক ধ্বংস ঘটাতে পারে এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক আর কতজন হামাস সদস্য তা জানায়নি মন্ত্রণালয়। তবে, নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে তারা।
এদিকে, শুরু থেকেই গাজায় গণহত্যার দাবি অস্বীকার করে আসছে ইসরায়েল। তাদের ভাষ্য—আত্মরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আইন মেনেই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেওয়া বক্তব্যের পাশাপাশি আরও অনেক ‘পরোক্ষ প্রমাণ’ও পাওয়া গেছে যা থেকে বোঝা যায় গাজায় গণহত্যাই চালাচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কমিশন মনে করছে, ফিলিস্তিনিদের পুরো বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়েই কার্যক্রম চালাচ্ছে গাজায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনী।’ তবে জেনেভায় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এই প্রতিবেদনের ফলাফলকে ‘মিথ্যা’ ও ‘কলঙ্কজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।