জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যখন গাজা যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে, তখনো সেখানে নির্মম নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল বুধবার রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় বুধবার এক দিনেই নিহত হয়েছে অন্তত ৮৫ জন ফিলিস্তিনি, যা গতকালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল রাতে গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরের আল-আহলি স্টেডিয়ামে এক বিমান হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে সাতজন নারী ও দুটি শিশু। স্টেডিয়ামটি বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
গাজা সিটি থেকে পালিয়ে আসা এক নারী নাজওয়া আল–জাজিরাকে বলেন, ‘হাতে যা ছিল তাই নিয়ে বেরিয়ে এসেছি। আর কিছু নেই। আমরা আতঙ্কিত। পরিবহন খরচ বহন করা সম্ভব নয়, জিনিসপত্র আনতেও পারিনি।’
জাতিসংঘ সতর্ক করে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটিতে ‘ভয় ও সন্ত্রাস চাপিয়ে দিচ্ছে’ এবং হাজার হাজার মানুষকে জোরপূর্বক পালাতে বাধ্য করছে। তবে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান এয়াল জামির দাবি করেছেন, ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে পাঠানো হচ্ছে ‘তাদের নিরাপত্তার জন্য’। জামির জানিয়েছেন, ‘বেশির ভাগ মানুষ ইতিমধ্যে গাজা সিটি ছেড়েছে’ এবং সেনারা ‘পদ্ধতিগতভাবে ও ধাপে ধাপে শহরে অগ্রসর হবে।’
কিন্তু জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন এই দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রকৃত লক্ষ্য হলো গাজায় স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলের ভেতরে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৫ হাজার ৪১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মরদেহ চাপা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৬০ জন।