হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

বিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মিসর

ঢাকা: টানা ১১ দিনের ভয়াবহ সংঘাতে বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলি হামলায় ৬৫ শিশুসহ প্রাণ গেছে ২৩২ ফিলিস্তিনির। জাতিসংঘের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৯০ হাজারের বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুতদের বেশির ভাগই আশ্রয় নিয়েছেন জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সির ৫৮টি স্কুলে। গাজা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় মোট ক্ষতির পরিমাণ ৩২২ মিলিয়ন ডলার। প্রায় ১৩ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিপর্যস্ত গাজা পুনর্গঠনে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মিসর। ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ঘোষণার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে বক্তব্য দেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জো বাইডেন তাঁর বক্তব্যে গাজায় মানবিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, গাজায় দ্রুত মানবিক সহায়তা প্রদান করতে ও গাজা পুনর্গঠনে জাতিসংঘ ও অন্য আন্তর্জাতিক দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, গাজা পুনর্গঠনে ফিলিস্তিন সরকারের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেটি হামাসের সঙ্গে নয়। হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মনে করে।

এদিকে চীন ও মিসরও বিপর্যস্ত গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। চীনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা কর্তৃপক্ষের (সিআইডিসিএ) মুখপাত্র তিয়ান লিন দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া নিউজকে গাজা উপত্যকায় চীনের সহায়তা পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সিনহুয়াকে তিয়ান লিন বলেন, গত ১১ দিনের যুদ্ধে গাজা ভূখণ্ডের অবকাঠামোগত অবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানকার কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিপুলসংখ্যক বাড়িঘর, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় চীন সরকারের সম্মতিক্রমেই সিআইডিসিএ ওই এলাকা পুনর্গঠনে সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিয়ান লিন আরও বলেন, বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণের কারণে যাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, সবার আগে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

এদিকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর জাতিসংঘে মিসরের প্রতিনিধি মোহামেদ ইদ্রিস জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোকে গাজা পুনর্গঠনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বিবৃতিতে বলা হয়, মিসরের দেওয়া সমঝোতা প্রস্তাব অনুযায়ী যুদ্ধবিরতিতে তারা সম্মত। তবে এই যুদ্ধবিরতি হবে ‘দ্বিপক্ষীয় ও শর্তহীন’।

ফিলিস্তিন ইস্যু বহু বছর ধরেই আরব বিশ্বে বড় সমস্যা হয়ে থাকলেও গত বেশ কয়েক বছরের মধ্যে অঞ্চলটিতে এমন সংঘাত ঘটেনি। গত ১০ মে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে মসজিদ আল আকসায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ফিলিস্তিনি নাগরিক ও ইসরায়েলের পুলিশ। আল আকসা থেকে পুলিশ প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দেয় হামাস। তাতে সাড়া না দেওয়ায় হামাসের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ছোড়া হলে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গত ১০ মে এই সংঘাত শুরুর পর থেকেই বিশ্বনেতারা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা উভয় পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকও ডাকে জাতিসংঘ। শুরু থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসে মিসর, কাতার ও জাতিসংঘ। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। বিশেষ দূত পাঠানোর পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় শেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানালে আশা দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার গাজা পরিস্থিতি নিয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে আলোচনা করেন বাইডেন। পরে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আশা প্রকাশ করা হয়।

 

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা