ইসরায়েলের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জ্যাক নেরিয়া সতর্ক করেছেন, ইরানের সঙ্গে শিগগির দ্বিতীয় দফা সংঘাত শুরু হতে পারে। স্থানীয় রেডিও চ্যানেল ১০৩ এফএমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেরিয়া দাবি করেছেন, হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইরান, যা আসন্ন হামলার আশঙ্কার ইঙ্গিত বহন করছে।
নেরিয়া বলেন, একধরনের অনুভূতি তৈরি হয়েছে যে যুদ্ধ আসছে। ইরান প্রতিশোধ নিতে চাইছে। সাম্প্রতিক ঘটনাকে ঘিরে তারা দীর্ঘদিন অপমান সহ্য করবে না।
২০২৪ সালে হিজবুল্লাহ সদস্যদের বিতরণ করা হাজার হাজার পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল। পরে এগুলো একযোগে বিস্ফোরিত হলে হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে এবং এ বাহিনীর যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়ে। এ ঘটনাকে নেরিয়া ইরানের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করেন।
নেরিয়া আরও দাবি করেন, ইরান এখন সিরিয়ার বর্তমান সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, সিরিয়ার নেতৃত্ব ইসরায়েলের সীমান্ত শান্ত রাখতে চায়। অথচ ইরান সেখানে প্রভাব বিস্তার করে ইসরায়েলকে ঘিরে ফেলতে চেয়েছিল। সিরিয়ায় আল-শারার উত্থান সে কৌশল ভেঙে দিয়েছে। আসাদ সরকারের পতনের পর হিজবুল্লাহর আঞ্চলিক শক্তিও ভেঙে পড়েছে। তাই ইরান এখন আল-শারার সরকারকে উচ্ছেদ করতে চাইছে।
এদিকে ‘জেরুজালেম সেন্টার ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড ফরেন অ্যাফেয়ার্স’-এর এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের হাতে অপমানজনক পরাজয়ের পর ইরান আবারও তার আঞ্চলিক সহযোগী গোষ্ঠীগুলোকে শক্তিশালী করতে চাইছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে আকস্মিক হামলা চালায়। এতে বহু ইরানি ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন এবং পারমাণবিক ও বিমান প্রতিরক্ষা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইরানের হিসাবে ওই হামলায় মোট ১ হাজার ৬২ জন নিহত হয়েছে—যার মধ্যে ৭৮৬ জন সামরিক ও ২৭৬ জন সাধারণ নাগরিক।
বিশ্লেষণে আরও বলা হয়েছে, নতুন নেতা নাঈম কাশেমের নেতৃত্বে হিজবুল্লাহকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে ইরান। পাশাপাশি লেবানন সরকার হিজবুল্লাহ বাহিনীর অস্ত্র প্রত্যাহারের যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তারও বিরোধিতা করছে। লেবাননের সেনাবাহিনী যেন ভবিষ্যতে কোনো সংঘাতে হিজবুল্লাহকে চ্যালেঞ্জ করার মতো শক্তি অর্জন করতে না পারে, এ বিষয়ে ইরান দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।