হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

সুয়েইদা প্রদেশে ইসরায়েলি হামলা

সেনা মোতায়েনের পথে সিরিয়া

১৩ জুলাই থেকে দ্রুজ ও বেদুইন সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। আগুন লাগা একটি ভবনের সামনে বেদুইনরা। গতকাল সিরিয়ার দক্ষিণ সুয়াইদার আল-মাজরা গ্রামে। ছবি: এএফপি

সিরিয়ায় দ্রুজ জনগোষ্ঠী-অধ্যুষিত সুয়েইদা প্রদেশে ৬ দিনের সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। এদিকে দ্রুজ গোষ্ঠীকে রক্ষার নামে ওই অঞ্চলে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এ পরিস্থিতিতে ওই প্রদেশে আবার সেনাসদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির ইসলামপন্থী সরকার।

গত রোববার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের এই প্রদেশে নতুন করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়। দ্রুজ যোদ্ধা ও সুন্নি বেদুইন গোষ্ঠীর সদস্যদের মুখোমুখি সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হন।

সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্রুজ যোদ্ধা ও সুন্নি বেদুইন গোষ্ঠীর সদস্যদের শান্ত করতে আবার সুয়েইদা প্রদেশে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। এই অঞ্চলে সংঘাতের অবস্থার অবনতি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যই আবার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলের পাবলিক ব্রডকাস্টার কান নিউজ অনুসারে, ইসরায়েল এর আগে সতর্ক করে বলেছিল, দক্ষিণাঞ্চল থেকে সিরিয়া সরকারি বাহিনীকে সরে যেতে হবে। এই সতর্কবার্তা দেওয়ার পরই গত শুক্রবার সিরিয়ার পালমিরা-হোমস মহাসড়কে হামলা চালায় ইসরায়েল। তারা মূলত সুন্নি বেদুইন গোষ্ঠীর সদস্যদের লক্ষ্য করেই হামলা করে। এই হামলার দুই দিন পর আবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কেও হামলা চালায় ইসরায়েল।

বেদুইন গোষ্ঠীর সদস্যরা জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সুয়েইদা প্রদেশ থেকে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার পর দ্রুজদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে বেদুইনরা। তারপর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার মাধ্যমে একটি সুরাহার চেষ্টা করে তারা।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার সিরিয়ার সংখ্যালঘু দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। এর আগে মঙ্গলবার ওই অঞ্চলে সরকারি সেনা মোতায়েন করার পর সংঘাতের মাত্রা বেড়ে যায়। একপর্যায়ে দ্রুজদের সুরক্ষা দিতে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

জেরুসালেম পোস্টে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন ও লেবাননের পর এবার সিরিয়ায় বড় আকারের বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গত সোম থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণ সিরিয়ার সুয়েইদা ও এর আশপাশের এলাকায় সরকারি বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে অন্তত ১৬০টি আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। এ ছাড়া আইডিএফ সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে হামলা চালিয়েছে এবং দামেস্কের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের একটি অংশেও বোমাবর্ষণ করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল আল জাজিরার জেইনা খোদর জানিয়েছেন, স্থানীয়দের সাহায্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবার সুয়েইদা প্রদেশে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিরিয়া সরকার। তিনি আরও জানান, অনেক আগে থেকেই এই প্রদেশে বেদুইন উপজাতিরা বসবাস করে। নিজেদের টিকিয়ে রাখতে এই সংঘাতে অন্যান্য উপজাতিকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

জেইনা খোদর বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে বাশার আল আসাদের পতন হয়। তারপর থেকেই এই অঞ্চলে সংঘাতের মাত্রা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, বেদুইন ও দ্রুজদের কিছু অংশের অনেক আগে থেকেই ঝামেলা ছিল। কিন্তু আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে আরও সংঘাত বেড়ে গেছে। বেদুইনরা এই সংঘাতে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ কামনা করায় বর্তমানে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েল কী করবে? বলা হচ্ছে, তারা সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর উপস্থিতির অনুমোদন দেবে না।

বেদুইন সামরিক গোষ্ঠীর এক কমান্ডার রয়টার্সকে বলেন, ‘এই যুদ্ধবিরতি শুধু সরকারি বাহিনীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আমাদের ক্ষেত্রে নয়। আমরা আটক বেদুইনদের মুক্ত করব। কারণ আমাদের অনেককেই আটক করে রেখেছে দ্রুজ গোষ্ঠীর সশস্ত্র বাহিনী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সুয়েইদা প্রদেশে নিজেদের অবস্থা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বেদুইন যোদ্ধারা। সশস্ত্র উপজাতিদের সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন বেদুইন উপজাতি নেতা আব্দুল মোনেইম আল নাসিফ।

দ্রুজ কারা?

আরব জাতিগোষ্ঠীর হলেও দ্রুজরা অনুসরণ করে ইসলামের শাখা থেকে উদ্ভূত এক ধর্মবিশ্বাস, যা ১১ শতকে গড়ে উঠেছিল। দ্রুজদের ধর্মবিশ্বাস শিয়া ইসলামের একটি শাখা হলেও এতে রয়েছে নিজস্ব পরিচয় ও বিশ্বাস। এতে ইসলাম ছাড়াও নানা দর্শনের সংমিশ্রণ রয়েছে; ধর্মবিশ্বাসে রয়েছে একেশ্বরবাদ, পুনর্জন্ম ও সত্যের অনুসন্ধানের ওপর জোর। এই ধর্মীয় বিশ্বাসের আচার-অনুষ্ঠান তারা গোপনে পালন করে। কিছু কট্টর সুন্নি গোষ্ঠী তাদের ধর্মদ্রোহী বলে মনে করে।

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা