রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্মানে আজ শুক্রবার রাতে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। কিন্তু দলের দুই জ্যেষ্ঠ নেতা—লোকসভার বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আমন্ত্রণ পাননি বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ছয় মাস ধরে দলের সঙ্গে যাঁর সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা বাড়ছে, সেই শশী থারুর আজ সন্ধ্যায় তাঁর অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান হিসেবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা প্রটোকলের অংশ।
তবে রাহুল গান্ধী বা মল্লিকার্জুন খাড়গের মতো জ্যেষ্ঠ নেতাকে আমন্ত্রণ না জানানো প্রসঙ্গে থারুর নিজেকে ‘আমন্ত্রণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অজ্ঞাত’ বলে দাবি করেছেন।
এ ঘটনার পর কংগ্রেসের আরও এক নেতা পবন খেরা থারুরের নাম উল্লেখ না করে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমন্ত্রণ পাঠানো এবং তা গ্রহণ করা বেশ আশ্চর্যজনক। যখন আমার নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি...অথচ আমাকে করা হয়েছে...তখন আমাদের বোঝা উচিত, কেন এই খেলা খেলা হচ্ছে, কে খেলছে এবং কেন আমাদের এর অংশ হওয়া উচিত নয়...।’
এদিকে, রাহুল গান্ধী ও খাড়গেকে আমন্ত্রণ না জানানোর ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, সরকার বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বিরোধী দলের নেতাদের বৈঠককে উৎসাহিত করছে না। তাঁর মতে, আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করত, কিন্তু এখন বিদেশিরাই ঠিক করেন তাঁরা কার সঙ্গে দেখা করবেন।
এ বিষয়ে থারুর রাহুল গান্ধীকে সমর্থন করে বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতা তাঁর বক্তব্য দিয়েছেন। আমার মনে হয়, সরকারের এর জবাব দেওয়া উচিত।’ অবশ্য সরকারি সূত্র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
থিরুবনন্তপুরমের চারবারের লোকসভা সাংসদ থারুর কয়েক মাস ধরে কংগ্রেসের ভেতরে মতবিরোধের অন্যতম কণ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তিনি অতীতে বিজেপি নেতা এল কে আদবানি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রশংসা করায় দলের ভেতর থেকেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
থারুর গত মাসে রামনাথ গোয়েঙ্কা লেকচারে মোদির দেওয়া ভাষণের প্রশংসা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কংগ্রেসের এক নেতা প্রশ্ন তোলেন—‘শশী থারুরের কাছে যদি মোদি এতই ভালো, তবে তিনি কংগ্রেসে আছেন কেন?’
তবে জুন মাসে থারুর বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য মানেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া নয়। থারুর দাবি করেন, তিনি ১৬ বছর ধরে দলের প্রতি অনুগত আছেন।
সম্প্রতি থারুর ভারতে বংশপরম্পরার রাজনীতি নিয়ে একটি নিবন্ধ লেখেন। সেখানে তিনি মেধাতন্ত্র বা যোগ্য নেতা হওয়ার পথে বাধা হিসেবে গান্ধী-নেহরু পরিবারের উল্লেখ করেন।