পূর্ব ইউরোপের দেশ লিথুয়ানিয়ার আকাশে প্রতিবেশী দেশ বেলারুশ থেকে চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত বেলুন বারবার ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ করেছে ভিলনিয়াস। লিথুয়ানিয়া জানাচ্ছে, বেলারুশ থেকে আসা চোরাচালানের বেলুন আকাশপথে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। তাই আজ মঙ্গলবার লিথুয়ানিয়ার সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সরকার সামরিক বাহিনীকে পুলিশ ও সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য পার্লামেন্টের কাছে আবেদন জানিয়েছে। লিথুয়ানিয়া বলছে, সিগারেট পাচারকারীরা আবহাওয়ার বেলুন পাঠাচ্ছে। এই ধরনের বেলুন রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের পক্ষ থেকে একটি ‘হাইব্রিড আক্রমণ।’ এ কারণে ভিলনিয়াস বিমানবন্দর বারবার বন্ধ করতে হয়েছে।
লিথুয়ানিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিস্লাভ কন্দ্রাতোভিচ মঙ্গলবার এক সরকারি বৈঠকে বলেছেন, ‘কেবল বেসামরিক বিমান চলাচলে বিঘ্নের জন্য নয়, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেও এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।’
বেলারুশ এই বেলুনের দায় অস্বীকার করেছে এবং লিথুয়ানিয়ার বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ এনেছে, যার মধ্যে ‘উগ্রবাদী বস্তু’ ফেলার জন্য একটি ড্রোন পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে, যা লিথুয়ানিয়া অস্বীকার করেছে।
কন্দ্রাতোভিচ জানিয়েছেন, লিথুয়ানিয়া সরকার জরুরি অবস্থার সময় পুলিশ, সীমান্তরক্ষী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য এবং প্রয়োজনে নিজস্বভাবে কাজ করার জন্য সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা দেওয়ার অনুরোধ করেছে সংসদের কাছে।
যদি পার্লামেন্ট এতে সম্মত হয়, তবে সেনাবাহিনীকে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্রবেশাধিকার সীমিত করা, যানবাহন থামানো ও তল্লাশি করা, লোকজনকে পরীক্ষা করা, তাদের কাগজপত্র ও জিনিসপত্র পরীক্ষা করা এবং যারা প্রতিরোধ করবে বা অপরাধে সন্দেহভাজন তাদের আটক করার অনুমতি দেওয়া হবে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্টাস কাউনাস বলেছেন, এই কাজগুলোর জন্য সামরিক বাহিনী শক্তি ব্যবহার করার অনুমতি পাবে। সাবেক সরকার যত দিন না তুলে নিচ্ছে, তত দিন এই জরুরি পদক্ষেপগুলো বহাল থাকবে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়ন গত ১ ডিসেম্বর বলেছিলেন, সীমান্তে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে এবং বেলুনের অনুপ্রবেশকে বেলারুশের একটি ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হাইব্রিড আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
অবৈধভাবে সীমান্ত পার করে অভিবাসী পাঠানোর জন্য বেলারুশের একটি অভিযানের কারণে লিথুয়ানিয়া ২০২১ সালেও বেলারুশ সীমান্ত অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। এর পরের বছর, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর লিথুয়ানিয়াও লক্ষ্যবস্তু হতে পারে এই আশঙ্কায় ভিলনিয়াস জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল।