ঢাকা: চীনের রোড অ্যান্ড বেল্ট প্রকল্পকে টেক্কা দিতে উন্নয়নশীল দেশের অবকাঠামো খাতে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছে ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি৭। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চলমান জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে এ ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাইডেন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের ট্রিলিয়ন ডলারের মেগা প্রজেক্ট ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নিয়ে চিন্তিত ধনী দেশগুলোর নেতারা। চীনা এই উদ্যোগের প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড় করাতে আজ শনিবারই উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য একটি ‘বৈশ্বিক অবকাঠামো পরিকল্পনা’ ঘোষণা আসতে পারে।
গত ৪০ বছরে চীনের দৃশ্যমান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী সি চিন পিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় একটি কার্যকর পরিকল্পনা সন্ধান করে যাচ্ছে জি৭।
ওই মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘জোরপূর্বক শ্রম আদায়’ বিষয়ে চীনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জি৭ নেতাদের চাপ দেবে। তিন দিনের শীর্ষ সম্মেলনে বেইজিংয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে জোটের নেতাদের রাজি করানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি কেবল চীনের মুখোমুখি দাঁড়ানো বা শোধ নেওয়ার বিষয় নয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের মূল্যবোধ, মানদণ্ড এবং আমাদের ব্যবসায়ের পদ্ধতি প্রতিফলিত করে এমন কোনো বিকল্প খুঁজে পাইনি।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) বহু ট্রিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো প্রকল্প। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২০১৩ সালে এ প্রকল্প শুরু করেন। এই প্রকল্পের সঙ্গে এশিয়া থেকে ইউরোপ এবং এর বাইরেও উন্নয়ন ও বিনিয়োগ জড়িত। বিআরআই প্রকল্পের রেলপথ, বন্দর, মহাসড়ক এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের মতো উদ্যোগে সহযোগিতা করার জন্য ১০০ টিরও বেশি দেশ চীনের সঙ্গে এরই মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
সমালোচকেরা বলছেন, চীনের প্রাচীন বাণিজ্য পথ ‘সিল্ক রোড’–এর একটি আধুনিক সংস্করণই হলো এশিয়া, ইউরোপ এবং এর বাইরের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ বিআরআই। পরিকল্পনাটি কমিউনিস্ট চীনের প্রভাব–প্রতিপত্তি সম্প্রসারণের একটি বাহন। তবে বেইজিং বলছে, এই ধরনের সন্দেহ বহু পাশ্চাত্য শক্তির ‘ইম্পিরিয়াল হ্যাংওভার’–এর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। এই করেই তাঁরা বহু শতাব্দী ধরে চীনের অবমাননা করে আসছেন।