হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

রাশিয়ার হামলায় যেভাবে বদলে যাচ্ছে ইউক্রেনের মানুষের জীবন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

একটি ভূগর্ভস্থ ক্লাসরুমে পাঠ নিচ্ছে ইউক্রেনের শিশুরা। ছবি: সিএনএন

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পাঁচ বছরের শিশু টিম হ্রিশচুক কল্পনাও করেনি, তার স্কুলজীবনের প্রথম দিনটি কাটাতে হবে ভূগর্ভস্থ আশ্রয়ে। ২ সেপ্টেম্বর সকালে যখন বিমান হামলার সাইরেন বাজল, তখন সে এবং তার সহপাঠীরা ক্লাসরুম ছেড়ে সোজা চলে যায় বাংকারে। এভাবেই চলছে যুদ্ধের ভেতর দিয়ে ইউক্রেনের নতুন প্রজন্মের বেড়ে ওঠা।

রাশিয়া চলতি বছরের শুরুতে ড্রোন উৎপাদন বাড়ানোর পর থেকে হামলার মাত্রা ও ঘনত্ব বেড়েছে। আগে বেশির ভাগ আক্রমণ হতো রাতে, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দিনের বেলাতেও হুমকি বেড়েছে। শুধু কিয়েভেই ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ এর বেশি বিমান হামলার সতর্কতা জারি হয়েছে। সব মিলিয়ে ২ হাজার ২০০ ঘণ্টারও বেশি সময় মানুষকে আশ্রয়ে কাটাতে হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই গড়ে প্রতিদিন দুইবার সাইরেন বেজেছে। প্রতিটি সতর্কতা মানেই লাখ লাখ মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেমে যাওয়া—যা আসলে রাশিয়ার এক ধরনের কৌশল, ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে ক্লান্ত ও আতঙ্কিত করে রাখা।

যুদ্ধের বাস্তবতায় কিয়েভের ওরিয়েন্টাল ল্যাঙ্গুয়েজেস স্কুলের ৭০০ শিক্ষার্থীকে মাত্র ছয় মিনিটের মধ্যেই বাংকারে নিয়ে যাওয়া যায়। প্রতিটি স্কুলেই এখন দায়িত্বে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। সাইরেন বাজলেই তারা শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজটি সমন্বয় করছেন। আর শিক্ষকদের কাজ শুধু শিশুদের শারীরিক নিরাপত্তা নয়, মানসিক সুস্থতাও রক্ষা করা। দীর্ঘ সময় আশ্রয়ে থাকতে হলে তারা সেখানেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে খেলা, গল্প বা ভিডিও দেখানোর ব্যবস্থা করেন। তারপরও ক্লাসে ফেরার পর শিশুদের ক্লান্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

দিনদিন জীবনের নানা খাতে পরিবর্তন এসেছে। কিয়েভের সবচেয়ে বড় শপিং মল লাভিনা, যেখানে একসঙ্গে ২০ হাজার মানুষ কেনাকাটা করতে পারেন। কিন্তু প্রতিবার সাইরেন বাজলেই সেখানে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এ অবস্থায় কেনাকাটার ধরনও বদলেছে। মানুষ এখন দ্রুত প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করে চলে যান, যেন হঠাৎ কোনো সাইরেন তাদের থামিয়ে না দেয়। মলের সিইও জানান, জরিপে দেখা গেছে অনেকেই প্রতিটি দিনকে শেষ দিন ভেবে জীবন উপভোগ করার চেষ্টা করছেন।

ইউক্রেনের বিনোদন জগৎও এখন স্থবির। সিনেমা বা নাটক দেখার মাঝপথেও দর্শকদের হঠাৎ করে গিয়ে নামতে হয় ভূগর্ভস্থ আশ্রয়ে। প্রযোজকেরা মজা করে বলছেন—এখন সিনেমার মান যাচাইয়ের নতুন মাপকাঠি হলো—আশ্রয় থেকে দর্শকেরা আবার হলে এসে বসে কি না।

রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হামলা ঠেকাতে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষও স্বেচ্ছাসেবী ইউনিট গঠন করছে। কেউ মেশিনগান দিয়ে ছোট ড্রোন ভাঙছে, কেউ আবার বিশেষ ইন্টারসেপ্টর ড্রোন চালাচ্ছে। এসব ইউনিটে শ্রমিক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কবিরাও রয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবীদের ছয় সপ্তাহ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই প্রশিক্ষণে তাদের ড্রোন চালানোর কৌশল শেখানো হয়।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাশিয়া বর্তমানে মাসে পাঁচ হাজারের বেশি দীর্ঘ পাল্লার ড্রোন তৈরি করছে। এর জন্য তারা চীনা যন্ত্রাংশের ওপর নির্ভর করছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন রাশিয়াকে বিভিন্ন ডুয়েল-ইউজ প্রযুক্তি দিচ্ছে, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্যভাবে পাওয়া সম্ভব নয়।

এই কঠিন বাস্তবতায় ছোট্ট টিম হ্রিশচুকের মতো শিক্ষার্থীরা এখন বাংকারেই পাঠ নিচ্ছে। সবার ব্যাগে থাকে পানি, খাবার আর জরুরি যোগাযোগের তথ্য। স্কুলের দ্বিতীয় দিনটিতে তাকে তিন ঘণ্টা আশ্রয়ে কাটাতে হয়েছিল। খেলার ফাঁকে টিম হ্রিশচুক স্বীকার করেছে—তার তখন অনেক বিরক্ত লাগছিল।

আবারও পোল্যান্ডে সেনা পাঠাচ্ছে জার্মানি

শান্তির জন্য ন্যাটোর আশা ছাড়ার ইঙ্গিত দিল ইউক্রেন

১২৩ বন্দী মুক্তির বিনিময়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার পেল বেলারুশ

রাশিয়ার হামলায় বিদ্যুৎবিহীন ইউক্রেনের ১০ লাখ পরিবার

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

ইউক্রেনের ২ বন্দরে রুশ হামলায় ৩ তুর্কি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত

দনবাসে ‘মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গড়তে চায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্যবসা করবে সবাই

স্কুলে কিশোরীদের হেডস্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ করল অস্ট্রিয়া

যুক্তরাজ্যে ভারতীয়সহ ৬০০ ঔপনিবেশিক প্রত্নবস্তু চুরি, দুই মাস পর জানাল পুলিশ