২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর একজন স্থপতিকে তার কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার দিয়ে থাকে যুক্তরাজ্যের স্যার জন সোয়েন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। এবার যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ সোয়েন মেডেল পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশের স্থপতি ও চিন্তাবিদ মেরিনা তাবাসসুম। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে ২০১৯ সালে কেনেথ ফ্রাম্পটন, ২০১৮ সালে ডেনিস স্কট ব্রাউন এবং ২০১৭ সালে রাফায়েল মনেও এই পুরস্কার অর্জন করেন।
অনুশীলন, ইতিহাস বা তত্ত্বের মাধ্যমে অবদান এবং এটির মাধ্যমে স্থাপত্য সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে স্থাপত্যবিষয়ক বোঝাপড়াকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করার বিষয়টি বিবেচনা করে পুরস্কারটি দেওয়া হয়ে থাকে। বিশিষ্ট স্থপতি, সমালোচক ও তত্ত্বাবধায়কের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল এই পুরস্কারের জন্য বিজয়ীকে মনোনীত করে, যার নেতৃত্ব দেন স্যার জন সোয়েন মিউজিয়ামের সাবেক ট্রাস্টি স্যার ডেভিড চিপারফিল্ড।
এবারের বিজয়ী বাংলাদেশি মেরিনা তাবাসসুম। তিনি মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টসের (এমটিএ) প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর স্থাপনার বিশেষ দিক হচ্ছে, তিনি প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সংগতি রেখে ভবনের নকশা করে থাকেন। এক্ষেত্রে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের কথা মাথায় রেখে তিনি নকশা সাজান। তিনি বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে কাজ করছেন এবং দেশের উপকূলীয় এলাকায় অতিনিম্ন আয়ের লোকদের জন্য মোবাইল মডুলার ঘর নকশা করছেন।
মেরিনা তাবাসসুমের সৃষ্টিশীল কাজের মধ্যে বায়তুর রউফ মসজিদ উল্লেখযোগ্য। এটি ২০১২ সালে ঢাকায় নির্মিত হয়, যা রাজধানী ঢাকার আবদুল্লাহপুরে অবস্থিত। প্রাকৃতিক উপায়ে মসজিদের ভেতরে আলো-বাতাস প্রবেশের জন্য মসজিদটিকে এক বিশেষ নকশায় তৈরি করা হয়েছে। আলো-বাতাস প্রবেশের জন্য মসজিদের ছাদে বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট বৃত্তাকার নকশা করা হয়েছে। ফলে সূর্যের আলো সরাসরি ভেতরে প্রবেশ করে। এই মসজিদের নকশা করে তিনি ২০১৬ সালে আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কার অর্জন করেন।