হোম > বিশ্ব > এশিয়া

পুলিশের গাড়িচাপায় রাইড শেয়ার চালকের মৃত্যুতে ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভ, নিহত ৩

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

জাকার্তায় পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভকারীরা রাস্তার ব্যারিকেডে আগুন ধরিয়ে দেয়। ছবি: সংগৃহীত

গত সপ্তাহ থেকে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ইন্দোনেশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এসব দাবির মধ্য রয়েছে—আইনপ্রণেতাদের বেতন-ভাতা কমানো, শ্রমের মজুরি বাড়ানো, কর কমানো এবং দুর্নীতিবিরোধী শক্তিশালী ব্যবস্থা নেওয়া। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দমনের সময় পুলিশের গাড়িচাপায় ২১ বছর বয়সী এক রাইড শেয়ার চালক নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে এই বিক্ষোভের মাত্রা আরও বেড়েছে। বিক্ষোভ চলাকালীন অন্তত তিনজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুলাওয়েসির মাকাসার শহরে আঞ্চলিক সংসদ ভবনে আগুন দেওয়া হলে তিনজন নিহত হন এবং আরও পাঁচজন আহত হন। নিহতরা ভবন থেকে বের হতে না পেরে আগুনে দগ্ধ হন। এ ছাড়া কয়েক ডজন গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নিহতদের দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার খবর দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা অন্তারা। এদিকে রাজধানী জাকার্তা ও বৃহত্তম শহর সুরাবায়ায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।

মৃত চালকের নাম আফফান কুরনিয়াওয়ান (২১)। তিনি গো-জেক নামের বহুল ব্যবহৃত অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। চলমান এক বিক্ষোভে পুলিশের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে তাঁর মৃত্যু ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীও এই দাবি করেছেন।

ঘটনাটি ইন্দোনেশিয়ার নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তোর জন্য একটি বড় রাজনৈতিক পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে। তিনি এক বিবৃতিতে আফফান কুরনিয়াওয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ‘বিস্মিত ও মর্মাহত’ বলে উল্লেখ করেন এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশের ‘অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

জাকার্তার পুলিশ প্রধান আসেপ এদি সুহেরি নিহত চালকের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেন এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। একই সঙ্গে জাকার্তার গভর্নর প্রামোনো অনুং আফফানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও সমবেদনা জানান।

গত শুক্রবার আফফান কুরনিয়াওয়ানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সহকর্মীরা হাজার হাজার বাইক নিয়ে জানাজায় অংশ নেন। গো-জেকের পরিচিত সবুজ জ্যাকেট পরা চালকেরা সড়কে দাঁড়িয়ে তাঁকে শেষ বিদায় জানান। ড্রোনে ধারণকৃত ফুটেজে বিশাল জনসমাগম দেখা যায়।

গো-জেক এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রতিটি সবুজ জ্যাকেটের পেছনে রয়েছে একটি পরিবার, দোয়া এবং সংগ্রাম। আফফান কুরনিয়াওয়ান সেই যাত্রার অংশ ছিলেন। তাঁর এই চলে যাওয়া আমাদের গভীর শোকের মধ্যে ফেলেছে।’ প্রতিষ্ঠানটি তাঁর পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এদিন সকাল থেকেই হাজারো বিক্ষোভকারী রাজধানী জাকার্তায় জাতীয় পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। প্রতিবাদকারীরা ‘অপরাধী পুলিশদের গ্রেপ্তার করো’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। তাদের বাধা দিতে সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়িবহর আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের ভেতর থেকে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে পাথর ছোড়ে। তুমুল বৃষ্টির মধ্যেও কিছু অংশগ্রহণকারী মলোটভ ককটেল ও আতশবাজি ছোড়ে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম কোম্পাস জানিয়েছে।

অন্তারার খবরে বলা হয়, জাকার্তা, সুরাবায়া, বান্দুংসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

আফফান কুরনিয়াওয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ার মোবাইল ব্রিগেড কোরের (সাৎব্রিমোব) সাত সদস্যকে পুলিশ আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

এই আন্দোলনের পেছনে শুধু এক চালকের মৃত্যুই নয়, রয়েছে আরও অনেক বঞ্চনার ইস্যু। সাম্প্রতিক সময়ে আইনপ্রণেতাদের জন্য প্রস্তাবিত ৫ কোটি রুপিয়ার (প্রায় ৩ হাজার ৩০ ডলার বা ২ হাজার ২৫০ পাউন্ড) মাসিক ভাতা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গেছে। এই অর্থ রাজধানী জাকার্তার ন্যূনতম মজুরির প্রায় দশ গুণ।

বিক্ষোভকারীরা উচ্চতর মজুরি, কর কমানো এবং দুর্নীতিবিরোধী কঠোর পদক্ষেপেরও দাবি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

নাগরিকত্বের জন্য বসবাসের শর্ত দ্বিগুণ করল জাপান

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

তাইওয়ানে মেট্রো স্টেশনে স্মোক বোমা ছুড়ে ছুরি হামলা, নিহত ৩

জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি

দেশের টাকমাথার লোকদের বাঁচানোর লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরে বোমা ফেলল থাইল্যান্ড

ক্রিপটো চুরি করে এই বছর উত্তর কোরিয়ার আয় ২.২ বিলিয়ন ডলার

বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও ধর্মীয় বক্তাদের দমনে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

তাইওয়ানে বিপুল অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন, নিজের বিপদ ডেকে আনছে যুক্তরাষ্ট্র—হুমকি চীনের