কম্বোডিয়ার সঙ্গে বিতর্কিত সীমান্তে রয়্যাল থাই আর্মি বিমান হামলা শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। থাই সামরিক বাহিনী কম্বোডিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে তাদের সৈন্যদের ওপর গুলি চালানো এবং অন্তত একজনকে হত্যার অভিযোগ এনেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে থাই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল উইন্থাই সুভারি জানিয়েছেন, উবোন রাতচাথানি প্রদেশের নাম ইয়েন জেলার চং বক এলাকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর থাই সেনাবাহিনী বিমান মোতায়েন করেছে। সুভারি আরও বলেছেন, থাই আর্মি ‘সীমান্ত এলাকার বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দ্রুত সমর্থন জোগাচ্ছে।’
কম্বোডিয়াও এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে থাই বাহিনী প্রিয়া বিহার ও ওদ্দার মিয়ানচে সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোতে কম্বোডিয়ার সৈন্যদের ওপর হামলা চালায়। তবে তিনি এ-ও যোগ করেছেন যে, কম্বোডিয়া পাল্টা কোনো আঘাত হানেনি।
জুলাই মাসে পাঁচ দিনের এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়েছিল, কিন্তু এই হামলা হলো দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সহিংসতার সর্বশেষ উত্তেজনা। ওই সংঘর্ষের সময়ে কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত হয়েছিলেন এবং আনুমানিক ৩ লাখ মানুষ সাময়িকভাবে স্থানচ্যুত হন; এই সময় দুই প্রতিবেশী রকেট এবং ভারী আর্টিলারি বিনিময় করেছিল।
যে যুদ্ধবিরতির ফলে সংঘাতের অবসান হয়েছিল, সেটি সম্পন্ন করেছিলেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে দুই দেশের মধ্যে এক সম্প্রসারিত শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তবে উত্তেজনা এখনো বজায় আছে।
গত মাসে এক ভূমি মাইন বিস্ফোরণে থাই আর্মির এক সৈন্য আহত হওয়ার পর, থাইল্যান্ড জানিয়েছিল যে—তারা কম্বোডিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন বন্ধ করছে। যদিও নম পেন স্থলমাইন বিস্ফোরণের দায় অস্বীকার করে বলেছে, ডিভাইসটি ছিল পুরোনো সংঘাতের ধ্বংসাবশেষ।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে তাদের ৮১৭ কিলোমিটার (৫০৮ মাইল) স্থল সীমান্তের অচিহ্নিত স্থানগুলোতে সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে আছে। এই সীমান্তের প্রথম মানচিত্র ১৯০৭ সালে তৈরি করেছিল ফ্রান্স, যখন কম্বোডিয়া তাদের উপনিবেশ ছিল।
শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবিগুলো মীমাংসা করার চেষ্টা সত্ত্বেও, মাঝে মাঝে চাপা উত্তেজনা স্ফুলিঙ্গের মতো ছিটকে বের হয় এবং তা সংঘর্ষে রূপান্তরিত হয়, যেমন ২০১১ সালের এক সপ্তাহব্যাপী আর্টিলারি বিনিময়।