বেলারুশের একটি আদালত শান্তিতে নোবেলজয়ী অ্যালেস বিলিয়াতস্কিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। চোরাচালান এবং জনজীবনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কর্মকাণ্ডে অর্থায়নে আদালত তাঁকে দোষী করেছেন। মানবাধিকার সংস্থা ভিয়াসনার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
৬০ বছর বয়সী বিলিয়াতস্কির সমর্থকেরা বলছেন, বেলারুশের নেতা আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো তাঁর কণ্ঠরোধের জন্যই এ সাজা দিয়েছেন। বিলিয়াতস্কি ২০২২ সালে শান্তিতে নোবেল জয়ী তিনজনের একজন।
বেলারুশের বিতর্কিত নির্বাচনের পর ২০২১ সালে বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়লে বিলিয়াতস্কিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী দলকে সহযোগিতার জন্য অবৈধভাবে বাইরে থেকে বেলারুশে অর্থ আনার অভিযোগে আনা হয়।
২০২০ সালে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভের সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দমনে নিষ্ঠুরতার আশ্রয় নেয়। লুকাশেঙ্কোর সমালোচকদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৯৯৬ সালে বিলিয়াতস্কি প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা ভিয়াসনার তথ্য অনুযায়ী, একই দিন বিলিয়াতস্কির দুই সহযোগী ভ্যালেন্তিন স্তেফানোভিচ এবং ভ্লাদিমির ল্যাবকোভিচকেও আদালতে উপস্থিত করা হয়। স্তেফানোভিচকে নয় বছরের ও ল্যাবকোভিচকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আদালতে তাঁদের কেউই দোষ স্বীকার করেননি।
এ রায়ের ব্যাপারে বেলারুশ থেকে নির্বাসিত বিরোধীদলীয় নেতা সেতলানা তিখানভস্কায়া বলেন, ‘এই সাজা ভয়ানক। এই লজ্জাজনক রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই এবং তাঁদের মুক্ত করতে আমাদের সব পন্থা অবলম্বন করতে হবে।’
বিলিয়াতস্কিকে ২০২২ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সময় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসন বলেছিলেন, বেলারুশ সরকার বছরের পর বছর ধরে তাঁর কণ্ঠরোধের চেষ্টা করেছে। তাঁকে হয়রানি করা হয়েছে। জেলে পাঠানো হয়েছে এবং কর্ম থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বিলিয়াতস্কি বেলারুশের মানবাধিকার আন্দোলনের একজন প্রবীণ নেতা। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ১৯৯৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে দমন-পীড়নের প্রতিবাদে ১৯৯৬ সালে বিলিয়াতস্কি মানবাধিকার সংস্থা ভিয়াসনা প্রতিষ্ঠা করেন।
এ ছাড়া ২০১১ সালে কর ফাঁকির অভিযোগে তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তাঁকে ইউরোপের শেষ স্বৈরাচারও বলেন অনেকে।