নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে রীতিমতো গাজায় গণহত্যা চালানো দেশ ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। কেবল তাই নয়, পরে তিনি নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনপন্থী এক বিক্ষোভেও অংশ নেন। আর এসব ঘটনার পরপরই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পেত্রোর ভিসা বাতিল করা হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোর ভিসা বাতিল করা হবে। পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনপন্থী এক বিক্ষোভে পেত্রোর ‘উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের’ কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কলম্বিয়ার গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে পেত্রো নিউইয়র্ক থেকে বোগোতার পথে রওনা হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এর আগে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেত্রো ক্যারিবিয়ান সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ–চালানবাহী নৌকায় চালানো বিমান হামলাকে ‘স্বৈরাচারের কাজ’ হিসেবে আখ্যা দেন।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেত্রো নিজের এক ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে তাঁকে স্প্যানিশ ভাষায় মাইক্রোফোন হাতে জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়। অনুবাদক ইংরেজিতে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বিশ্বের দেশগুলোকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর চেয়েও বড় একটি বাহিনী’ গড়ে তুলতে আহ্বান জানান।
পেত্রো বলেন, ‘তাই এখান থেকে, নিউইয়র্ক থেকে আমি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের বলছি, মানবতার দিকে অস্ত্র তাক কোরো না। ট্রাম্পের নির্দেশ মেনো না। মানবতার নির্দেশ মানো।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তাঁর বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছে, ‘আজ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো নিউইয়র্কের রাস্তায় দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের নির্দেশ অমান্য করতে বলেছেন এবং সহিংসতায় উসকে দিয়েছেন। তাঁর বেপরোয়া ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আমরা তাঁর ভিসা বাতিল করব।’
এদিকে, কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরমান্দো বেনেদেত্তি শুক্রবার রাতে এক্সে লেখেন, ‘ভিসা বাতিল করার কথা ছিল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর। কিন্তু সাম্রাজ্য তাঁকে রক্ষা করছে। তাই একমাত্র প্রেসিডেন্টকে শাস্তি দিচ্ছে, যিনি তাঁর চোখের সামনে সত্যটা বলার সাহস দেখিয়েছিলেন।’
দেশের প্রথম বামপন্থি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পেত্রোর আমলে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কলম্বিয়ার সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। তবে শুধু পেত্রো নন, এ সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য নিউইয়র্কে আসার ভিসা পাননি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও আরও ৮০ জন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।
আরও খবর পড়ুন: