কানাডায় গ্রেপ্তারের এক সপ্তাহের মধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী ইন্দরজিৎ সিং গোসাল। কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পরই তিনি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী গুরপতবন্ত সিং পান্নুন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে হুমকি দিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির কাছে আসা একটি ভিডিওতে গোসালকে অন্টারিও সেন্ট্রাল ইস্ট কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
কারাগারের বাইরে তিনি নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করেন এবং ‘খালিস্তান’ আন্দোলনের জন্য পান্নুনের প্রতি তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। ভিডিওতে গোসাল বলেন, ‘ভারত, আমি মুক্ত। আমি গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে সমর্থন করতে আগামী ২৫ নভেম্বর খালিস্তানিদের নিয়ে গণভোটের আয়োজন করতে যাচ্ছি। দিল্লি হবে খালিস্তান।’
এদিকে গোসালের মুক্তির পর পান্নুনও ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে হুমকি দিয়েছেন। একটি ভিডিওবার্তায় পান্নুন বলেছেন, ‘অজিত দোভাল, পারলে কানাডা, আমেরিকা বা অন্য কোনো ইউরোপীয় দেশে এসে আমাকে গ্রেপ্তার করুন। আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।’
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসের প্রধান পান্নুন সম্প্রতি ভারতের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। তিনি এক বক্তব্যে ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় পতাকা উত্তোলন বন্ধ করার জন্য ১১ কোটি রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন।
২০২৩ সালে হরদীপ সিং নিজ্জারের মৃত্যুর পর কানাডায় শিখস ফর জাস্টিসের সংগঠকের দায়িত্ব নেন গোসাল। ১৯ সেপ্টেম্বর অন্টারিওতে একটি ট্রাফিক স্টপেজে তাঁকে নিউইয়র্কের জগদীপ সিং ও টরন্টোর আরমান সিংয়ের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের তিনজনের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর তাঁদের ওশাওয়ার অন্টারিও কোর্ট অব জাস্টিসে হাজির করা হয়।
কানাডিয়ান পুলিশ এনডিটিভিকে জানিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার, বিপজ্জনক উদ্দেশ্যে অস্ত্র রাখা, গুপ্ত অস্ত্র বহনসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল। পুলিশ আরও জানিয়েছিল, আনুষ্ঠানিক অভিযোগের পর তাঁদের কারাদণ্ডও হতে পারে।
কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার গোসালকে জামিন দেওয়া হয়। তবে কানাডায় এবারই প্রথম গ্রেপ্তার হননি গোসাল। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ব্রাম্পটনে একটি হিন্দুসভা মন্দিরে একটি হাতাহাতির ঘটনায় কানাডার পিল আঞ্চলিক পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল, কিন্তু তৎক্ষণাৎ তাঁকে জামিন দেওয়া হয়।
বছরখানেক আগে খালিস্তানপন্থীদের প্রতি অটোয়ার শিথিল মনোভাবের কারণে ভারত-কানাডা সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল। পরে নতুন কানাডিয়ান সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের কারণে সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারের পর এ সম্পর্ক নতুন রূপ নিচ্ছিল। তবে সাম্প্রতিক মামলাগুলোতে খালিস্তানপন্থীদের দ্রুত জামিন দেওয়া দেশটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভারতে নতুন করে সন্দেহ তৈরি করেছে।