পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফায়েজ হামিদকে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপসহ একাধিক অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রচার শাখা আইএসপিআর-এর এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, ফায়েজ হামিদ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগাম অবসরে যান হামিদ। পাকিস্তানের ইতিহাসে হামিদই প্রথম কোনো আইএসআই প্রধান, যাকে সামরিক আইনের মুখোমুখি হতে হলো।
আইএসপিআর জানিয়েছে, পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১৫ মাসব্যাপী চলেছে এই বিচারপ্রক্রিয়া। হামিদের বিরুদ্ধে মোট চারটি অভিযোগ আনা হয়—রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, অফিশিয়াল গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা, ক্ষমতা ও সরকারি সম্পদের অপব্যবহার এবং নাগরিকদের ক্ষতি সাধন।
সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামিদ নিজের পছন্দমতো আইনজীবী দল নিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য তাঁর কাছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অধিকারও উন্মুক্ত রয়েছে।
মামলার শুনানি সামরিক আদালতে হওয়ায় এর সুনির্দিষ্ট তথ্য গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করা হয়নি।
আইএসপিআর জানিয়েছে, হামিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্থিরতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ আলাদাভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। এই অভিযোগটি ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংস বিক্ষোভে হামিদের ভূমিকার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের ক্ষমতাকাঠামোতে আইএসআই প্রধানকে সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রভাবশালী পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এই রায় দেশটির রাজনৈতিক–সামরিক সম্পর্কে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।