স্থূলতায় আক্রান্ত ১৬ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের আদালত। ‘চরম অবহেলা’ দেখিয়ে ‘স্বাধীনচেতা’ ও ‘হাসিখুশি’ স্বভাবের মেয়েকে হত্যার দায়ে অ্যালুন টিটফোর্ডের কারাদণ্ড হতে পারে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাবার নিয়ন্ত্রণ না করার দায়ে এ ধরনের বিচার যুক্তরাজ্যে সম্ভবত এবারই প্রথম। ১ মার্চ সোয়ানসি ক্রাউন কোর্ট সাজার বিষয়ে রায় দেবেন।
অ্যালুন টিটফোর্ড ও সারাহ লয়েড-জোনস দম্পতির মেয়ে কাইলিয়া লুইজ টিটফোর্ড ২০২০ সালের অক্টোবরে মারা যায়। হাইড্রোসেফালাস নামের একধরনের মস্তিষ্কের রোগ নিয়ে সে জন্মেছিল। এই রোগের কারণে কাইলিয়া হাঁটতে পারত না। চলাচল করত হুইলচেয়ারে। মূলধারার স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিউটাউন হাইস্কুলে পড়ত। হুইলচেয়ার ব্যবহার করেই সে অংশ নিত খেলাধুলায় এবং ঘুরতে যেত। বাস্কেটবল খেলাতেও সে ছিল খুবই দক্ষ।
তার সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কায়লিয়া ছিল স্বাধীনচেতা, প্রাণবন্ত ও আড্ডাবাজ। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রথম লকডাউনের সময় সাত মাসে তার স্বাস্থ্যের অনেক অবনতি ঘটে। এরপর আর তাঁর স্কুলে ফেরা হয়নি। ওই বছরের ৯ বা ১০ অক্টোবর সে মারা যায়। তখন তার ওজন ছিল প্রায় ১৪৬ কেজি। স্থূলতাসংক্রান্ত নানা জটিলতা, স্পাইনা বিফিডা ও হাইড্রোসেফালাস তার মৃত্যুর কারণ বলে চিকিৎসকেরা জানান।
গ্রেপ্তারের পর কায়লার বাবা অ্যালুন টিটফোর্ড পুলিশকে জানান, লকডাউন শুরুর পর কায়লিয়া বিছানা থেকে আর উঠেছিল বলে তার মনে হয় না। তবে পরে আদালতে তিনি জানান, কাইলিয়া মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিল। বিছানা থেকে উঠতেও পারত সে।
মেয়ের যত্ন না নেওয়া বা তাকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উৎসাহিত না করার জন্য ‘নিজের অলসতা’কে দায়ী করেন তিনি। কারণ, তাঁকে কখনো কখনো সপ্তাহে সাত দিন কাজ করতে হতো। তাই মেয়ের স্বাস্থ্যের অবনতি সম্পর্কে তিনি তেমন জানতেন না।
এর আগে ডিসেম্বরে কায়লার মা সারাহ লয়েড-জোনসের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়। তিনি সেই অভিযোগ স্বীকার করেছেন।