উত্তর গোয়ার আর্পোরায় জনপ্রিয় নাইটক্লাব বার্চ বাই রোমিও লেনে গতকাল গভীর রাতে এক বিধ্বংসী আগুনে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে তাঁরা গোয়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন।
প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে ক্লাবটিতে আগুন ধরে যায়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিন থেকে চারজন পর্যটক এবং ১৯ জন ক্লাবের কর্মী রয়েছেন।
ঘটনাটি রাত আনুমানিক ১টা নাগাদ ঘটে। পুলিশ প্রথমে সন্দেহ করেছিল যে রান্নাঘরের কাছে একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে আগুন লেগেছে। তবে এই সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে। গোয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশের (ডিজিপি) মতে, পরিদর্শনের সময় সিলিন্ডারগুলো অক্ষত ছিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণটি এতটা শক্তিশালী ছিল যে আগুন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো ভবনটিকে গ্রাস করে ফেলেছিল। ফলে ভেতরে থাকা লোকজনের পালানোর সুযোগ কম ছিল।
নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে সরকারি বিস্তারিত তথ্যের জন্য এখনো অপেক্ষা করা হচ্ছে।
সারা রাত উদ্ধারকাজ চলে এবং কর্তৃপক্ষ মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করতে এবং পরিবারকে খবর দিতে কাজ করছে।
গোয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ জানিয়েছেন, ক্লাবের নিরাপত্তাব্যবস্থা, গ্যাস সংযোগ ব্যবস্থা এবং জরুরি বহির্গমন পরিকল্পনায় কোনো নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেও তদন্ত করা হবে।
একাধিক দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রায় দুই ঘণ্টা তীব্র প্রচেষ্টার পর অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
নাইটক্লাবটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং মালিক ও ব্যবস্থাপকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ক্লাবটি অগ্নিনিরাপত্তা বিধি মেনে চলেনি।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ডা. প্রমোদ সাওয়ান্ত আর্পোরায় বার্চ বাই রোমিও লেন নাইটক্লাবে এই মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘খুবই বেদনাদায়ক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সাওয়ান্ত নিশ্চিত করেছেন যে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ জানতে এবং অগ্নিনিরাপত্তা বিধি ও বিল্ডিং নিয়মাবলি অনুসরণ করা হয়েছিল কি না, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করার জন্য তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।