দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায় ১২ ঘণ্টা বিমানে আটকা থাকার পর ১৫৩ ফিলিস্তিনি নামার অনুমতি পেয়েছেন। দেশটির সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানীয় একটি মানবিক সংস্থা যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের অবতরণের অনুমতি দিয়েছে। খবর আল জাজিরার
দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (বিএমএ) জানিয়েছে, যাত্রীদের পাসপোর্টে সাধারণ প্রস্থান স্ট্যাম্প না থাকার কারণে তাদের প্রথমে অবতরণে বাধা দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁরা দক্ষিণ আফ্রিকায় কত দিন থাকবেন বা কোথায় অবস্থান করবেন, তা জানাতে পারেননি।
বিএমএ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইমিগ্রেশন পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কারণে এবং কেউ আশ্রয় চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ না করার কারণে প্রাথমিকভাবে তাদের দেশে প্রবেশে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছিল।’
ফিলিস্তিনি যাত্রীদের দীর্ঘ সময় বিমানে আটকা থাকার খবর দেশটিতে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে পরিচিত এবং গাজায় গণহত্যার জন্য ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে অভিযুক্ত করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে।
অবশেষে স্থানীয় মানবিক সংস্থা ‘গিফট অব দ্য গিভারস’ যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের অবতরণের অনুমতি দেয়। এর ফলে ১৩০ জন ফিলিস্তিনি দেশে প্রবেশ করেছেন এবং ২৩ জন বিমানবন্দর থেকে অন্য গন্তব্যে চলে গেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিমানটি দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লোবাল এয়ারওয়েজ পরিচালিত একটি চার্টার্ড ফ্লাইট এবং এটি কেনিয়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবেশ করেছিল। গিফট অব দ্য গিভারসের প্রতিষ্ঠাতা ইমতিয়াজ সুলিমান জানিয়েছেন, প্রথম বিমানটি ২৮ অক্টোবর জোহানেসবার্গে অবতরণ করে। তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা এসেছেন, দুই বছরের গণহত্যার পর তাঁদের অবস্থা সত্যিই ভাঙাচোরা।’
মানবিক সংস্থা গিফট অব দ্য গিভারসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে কিছু ফিলিস্তিনি যাত্রীর জন্য অতিরিক্ত সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকর্মী নাইজেল ব্র্যাঙ্কেন জানিয়েছেন, গাজার যাত্রীরা বলেছেন ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাঁদের জিনিসপত্র ফেলে দিয়ে অচিহ্নিত বিমানে ওঠার নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘খুব স্পষ্ট যে, (গাজার) মানুষদের সরাতে এবং স্থানচ্যুত করতে ইসরায়েল যে অপারেশন চালাচ্ছে, এই ঘটনায় তার স্পষ্ট ছাপ রয়েছে।’ ফিলিস্তিনিদের জন্য সহানুভূতি এবং মানবিক সহায়তার এই উদ্যোগ দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।