হোম > বিশ্ব > ভারত

চুদুরবুদুর থেকে নিজস্বী: বাংলা ভাষার গতিপথের খোঁজে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়

কলকাতা সংবাদদাতা

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা সংক্রান্ত কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ তুলে দেন উপাচার্য। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘বাওয়াল’, ‘ঝাক্কাস’, ‘ফুল্টুস’, ‘নিজস্বী’, ‘চুদুরবুদুর’—বর্তমান প্রজন্মের মুখে এসব শব্দ ঘুরে বেড়াচ্ছে অবলীলায়। বাংলা কি তবে তার শুদ্ধ স্বরূপ হারাচ্ছে? না কি এসব নতুন প্রয়োগে ভাষা আরও রঙিন, আরও বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠছে—এই বিতর্কে আলোকপাত করতেই পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ৫ দিনের এক বিশেষ কর্মশালা।

‘প্রয়োগের বাংলা, ব্যবহারের বাংলা’—শীর্ষক এই কর্মশালায় শুধু ভাষা নয়, সমাজ, সাহিত্য ও প্রযুক্তির ছত্রচ্ছায়ায় বদলে যাওয়া ভাষা-চর্চার স্বরূপও আলোচিত হয়েছে। ভাষাতত্ত্ব, সাহিত্যচর্চা এবং নতুন প্রজন্মের মুখের শব্দচয়নকে ঘিরে ছিল একাধিক আলোচনাসভা, পর্যালোচনা ও প্রেজেন্টেশন।

গত শুক্রবার কর্মশালার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কল্লোল পাল ৮৪ জন অংশগ্রহণকারী ছাত্র ও গবেষকের হাতে সনদ তুলে দেন। তিনি বলেন, ‘ভাষা নদীর মতো, চলমান। প্রয়োগের ভিন্নতাই বাংলাকে করেছে বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ। এই বৈচিত্র্যকে বোঝার মধ্যেই রয়েছে এই কর্মশালার সার্থকতা।’

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার মনে করিয়ে দেন, ‘বাংলা ভাষার সৌন্দর্য তার নিজস্বতায়। অহংবোধ যেন প্রয়োগে প্রাধান্য না পায়।’ পদার্থবিজ্ঞানী ও ভাষাবিদ পলাশ বরণ পাল বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ভাষা ব্যবহারের সেন্সর উঠে গেছে। সবাই এখন অকপটে মনের কথা বলে ফেলছে, ভালো-মন্দ সবই আসছে একসঙ্গে।’

সাহিত্যিক সিজার বাগচী বলেন, ‘যে ভাষা মুখে আছে, সেই ভাষাই একদিন সাহিত্যে ঢুকে পড়ে। কেনকি বা চুলবুলির মতো শব্দ ভবিষ্যতের সাহিত্যেরও অংশ হয়ে উঠবে।’ আইএসআই—এর লিঙ্গুইস্টিক রিসার্চ ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক নীলাদ্রি শেখর দাশ নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘ভাষা প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি করে বাংলা ভাষায় দক্ষ করে তোলা সম্ভব।’

কর্মশালায় ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক ড. শ্যামশ্রী বিশ্বাস সেনগুপ্তর উপস্থিতি এই আয়োজনকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে। ভাষার বিবর্তন ও আধুনিক প্রয়োগ বিষয়ে তাঁর বিশ্লেষণ কর্মশালাকে তাত্ত্বিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করেছে। তবে সবাই এতটা উদার নন। যেমন লেখক স্বপ্নময় চক্রবর্তীর মতে, ‘এফএম রেডিও বাংলায় ভাষাদূষণ ঘটাচ্ছে। শব্দ প্রয়োগে দায়বদ্ধতা থাকা উচিত।’

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুখেন বিশ্বাস বলেন, ‘এসব নতুন শব্দকে নথিভুক্ত করতে অভিধান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। লক্ষ্য করছি, বাংলা ভাষা ঠিক কোন দিকে বাঁক নিচ্ছে।’ এই সময় পত্রিকার সম্পাদক হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে ব্যবহৃত নতুন বাংলার প্রয়োগগত দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। ‘চুদুরবুদুর’ ও ‘নিজস্বী’ শব্দ সংবাদে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই শব্দগুলোই একদিন সাহিত্যে ফিরবে। অতীতে যেমন ফিরেছে নবারুণ ভট্টাচার্যের লেখায়।’

বাংলা ভাষার বহতা ধারা এবং নতুন প্রজন্মের ভাষা-চর্চার এই মিলনমেলা একদিকে যেমন ভাবনার খোরাক দিল, অন্যদিকে স্মরণ করিয়ে দিল ভাষার শুদ্ধতা ও বিবর্তন—দুইয়েরই সহাবস্থানে নিহিত বাংলার ভবিষ্যৎ।

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

বাংলাদেশের ভিসা স্থগিতে বিপাকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা, সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত জেলেনস্কির

মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন শেখ ফয়সাল নোমান আর নেই

চীনের ক্রমবর্ধমান সমরসজ্জার সামনে ‘অরক্ষিত’ যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তানে ফিরতে চান ইমরান খানের দুই পুত্র, ভিসার আবেদন