হোম > বিশ্ব > আফ্রিকা

ক্ষমতায় আছেন ৪৩ বছর, আরও থাকতে চান তিনি

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ইকুয়াটোরিয়াল গিনিতে দীর্ঘ ৪৩ বছর ধরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন তেওডোরো ওবিয়াং এনগুয়েমা এমবাসোগো। ৮০ বছর বয়সী এই শাসক তাঁর শাসন অব্যাহত রাখতে দেশটিতে পুনরায় নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

আগামী রোববার দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিবিসি জানিয়েছে, তিন লাখের বেশি নিবন্ধিত ভোটার ভোট দেবেন। 

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে থাকা ওবিয়াংয়ের বিরুদ্ধে গুম, নির্যাতনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী দলের কিছু প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তাঁদের জয়ের খুব একটা আশা নেই বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। 

তেলে সমৃদ্ধ এ দেশটির রাষ্ট্রক্ষমতায় ওবিয়াং ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বেশ শক্তভাবে আসন গেঁড়ে বসেছেন। প্রেসিডেন্টের ছেলে তেওডোরো এনগুয়েমা ওবিয়াং ম্যাঙ্গু দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বিরুদ্ধেও ইউরোপ-আমেরিকায় বিলাসবহুল জীবনযাপনের অভিযোগ রয়েছে। 

লিসবন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং আফ্রিকার রাজনীতি ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ আনা লুসিয়া সা বিবিসিকে বলেছেন, ‘এসব নির্বাচন স্রেফ লোক দেখানো। কার্যত কোনো কিছুরই পরিবর্তন হবে না। আমি নিশ্চিত, ওবিয়াং ৯৫ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।’ 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন টুটু অ্যালিক্যান্ট নামের একজন রাজনৈতিক কর্মী। তিনি বলেছেন, ‘আগামী রোববার মানুষ ভোট দেবে, তবে তা সরকারের ইচ্ছানুযায়ী। কারণ গিনিতে আপনি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারবেন না।’ ক্ষমতা না ছাড়তে যা যা করা দরকার, বর্তমান প্রেসিডেন্ট তার সবকিছুই করতে যাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। টুটু অ্যালিক্যান্ট বলেছেন, ‘এখানে বিরোধীদের দাঁড়ানোর কোনো সুযোগই নেই।’ 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে মুক্ত সংবাদপত্রের অভাব রয়েছে। কারণ সমস্ত সম্প্রচারমাধ্যম সরকারের মালিকানাধীন। রাজনৈতিক বিরোধীদের খুব কমই সহ্য করে সরকার। বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কঠোরভাবে বাধা দেওয়া হয়। 

প্রেসিডেন্ট ওবিয়াং তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেন। তিনি তাঁর ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে উজ্জ্বল করতে গত সেপ্টেম্বরে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করেছেন। তখন তাঁর এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিল জাতিসংঘ। 

 ১৯৭৯ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন ওবিয়াং। তারপর থেকে ওবিয়াংয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার অভ্যুত্থানচেষ্টা হয়েছিল। তবে প্রতিবারই সেসব চেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন।

অধ্যাপক সা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ওবিয়াং রাজনীতির খেলায় বেশ পটু এবং কুট কৌশলী। যার কারণে দীর্ঘ সময় ক্ষমতা দখল করে রাখতে পেরেছেন। তিনি দারিদ্র্যকে ‘রাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করেন। ওবিয়াং তাঁর ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য নির্বাচনী আইনগুলো নিজের মতো করে সংস্কার করেছেন।’ 

সমালোচকেরা বলেন, দেশটিতে ভোট জালিয়াতির ইতিহাস রয়েছে। এর আগে ২০০২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন ওবিয়াং। তবে সেই নির্বাচনকে বিরোধীরা ‘জালিয়াতি ও অনিয়মের ভোট’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ২০০৯ ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়েও। 
 
স্প্যানিশ, ফরাসি এবং পর্তুগিজভাষী দেশটি ১৯৯৬ সালে বিশাল তেলের মজুত আবিষ্কার করেছিল। তবে এতে খুব বেশি উপকৃত হয়নি দেশটির ১৪ লাখ মানুষ। ইকুয়াটোরিয়াল গিনিতে দারিদ্র্য এখনো প্রবল।  

সোমালিল্যান্ডকে ইসরায়েলের স্বীকৃতি—‘রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়ে প্রতাহারের দাবি সোমালিয়ার

নাইজেরিয়ায় হামলা: ‘বড়দিনের উপহার’ বলে উদ্‌যাপন ট্রাম্প প্রশাসনের, স্থানীয়রা বলছেন—‘কখনো আইএস দেখিনি’

প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর হামলা

ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনকে ‘অপরাধ’ গণ্য করে আলজেরিয়ায় আইন পাস

নাইজেরিয়ায় ক্যাথলিক স্কুলের অপহৃত আরও ১৩০ শিক্ষার্থী মুক্ত

এবার জোহানেসবার্গের পানশালায় বন্দুকধারীদের গুলি, নিহত ৯

সুদানে যোদ্ধা পাঠাচ্ছে আরব আমিরাতের ঠিকাদার, ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা দিলেন কলম্বিয়ানদের

সোনা খুঁজতে গিয়েছিল দুই কিশোর, খনি ধসে চাপা পড়ে হলো মৃত্যু

বেনিনে সামরিক অভ্যুত্থান ঠেকিয়ে দিল সরকার অনুগত সেনারা