'চোখের পলকে ভাড়াটেরা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে ঢুকেই তাঁরা গুলিবিদ্ধ করে আমার স্বামীকে ঝাঁজরা করে ফেলে। পুরো ঘটনাটি এত দ্রুত ঘটে যে প্রেসিডেন্ট কোন কথাই বলতে পারেননি।' হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইস হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে হাইতির ফার্স্ট লেডি মার্টিন মোইস টুইটারে এক অডিও বার্তায় এই রোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
বুধবার (৭ জুলাই) রাত ১টার ওই ঘটনায় আহত ফার্স্ট লেডি মার্টিন মোইস এখনো মিয়ামির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে বসেই তিনি এই টুইট বার্তা দেন। প্রেসিডেন্ট হত্যাকাণ্ডের পরে এটিই তাঁর প্রথম বক্তব্য। মোইসকে রাজনৈতিক কারণে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি স্বামীর অসমাপ্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।
ফার্স্ট লেডি বলেন, ''ওই দিন একজন অজ্ঞাতনামা বলছিল—'রাষ্ট্রপতির স্বপ্নকে হত্যা করতে চাই'। আমি কান্নাকাটি করছি সত্য, কিন্তু আমরা দেশকে পথ হারাতে দিতে পারি না। জোভেনেল মোইস আমার স্বামী, আমাদের প্রেসিডেন্ট, যাকে আমরা অনেক বেশি ভালোবাসি এবং তিনিও আমাদের ভালোবাসতেন। তাঁর রক্ত আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না।''
মোইস ২০১৭ সাল থেকে আমেরিকার সবচেয়ে দরিদ্রতম দেশ হাইতির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় রাজধানী এবং অন্যান্য শহরগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। ফেব্রুয়ারিতে বিরোধী দল তাঁর পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ করলেও তা ব্যর্থ হয়। এই বিক্ষোভের কারণে ২০১৯ সালের অক্টোবরে সংসদ নির্বাচন হয়নি। যার অর্থ মোইস ডিক্রি দিয়ে ক্ষমতায় ছিলেন। আগামী সেপ্টেম্বরে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক পরিবর্তনগুলি করে গণভোট করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
কিন্তু এর আগেই '২৮ জন ভাড়াটের' হাতে হত্যার শিকার হলেন আফ্রিকার সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইস। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তিনজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। বাকি আটজন এখনো পলাতক। হাইতি পুলিশ বলছে, যে ভাড়াটেদের বেশির ভাগই কলম্বিয় এবং দু'জন যৌথ নাগরিক ছিল। এরই মধ্যে হাইতির প্রেসিডেন্ট হত্যার তদন্তে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কলম্বিয়ার সরকার।