অনেক শিশুই রাতে ঘুমানোর সময় দাঁত পিষতে থাকে। একে ব্রুক্সিজম বলা হয়। সাধারণত ছয় মাস বয়সে মাড়িতে ব্যথা ও শিরশিরের কারণে অনেক শিশুই এমন করে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অভ্যাস দূর হয়ে যায়। কিন্তু কিছু শিশুর ক্ষেত্রে বয়স বাড়ার পরও এই অভ্যাস থেকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে কিশোর অবস্থা বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও দাঁত পেষার অভ্যাস যায় না। আপনার সন্তান এভাবে দাঁত পিষতে থাকলে এখনই সাবধান হোন।
শিশুদের ঘুম নষ্ট হওয়ার পেছনে নাক ডাকার পর দাঁত পেষা অন্যতম একটি সমস্যা। এটি অভ্যাসে পরিণত হলে মাড়িতে ব্যথা হতে পারে। আবার দাঁতের ওপরের একটি স্তর (এনামেল) নষ্ট হতে শুরু করে।
- নতুন দাঁত ওঠার সময় শিশুরা দাঁত পেষে। সব দাঁত বেরিয়ে এলে এ অভ্যাস আপনা-আপনি চলে যায়।
- সামনে-পেছনে দাঁত থাকলে এমন হতে পারে।
- কানে ব্যথা হলেও কোনো কোনো শিশু দাঁত কিড়মিড় করে।
- কিছু কিছু রোগের চিকিৎসা চলাকালীন এ সমস্যা দেখা দেয়।
বেশি বয়সের শিশুরা
- অবসাদ ও চিন্তার কারণে তারা রাতে দাঁত পিষে থাকে।
- ভয় পেলেও দাঁত পেষে অনেকে।
- ওষুধ খেলে রাতে ঘুমানোর সময় দাঁত কিড়মিড় করে।
- পেটে কৃমির কারণে দাঁত কিড়মিড় করে।
যে সমস্যা হতে পারে
- মাথাব্যথা করা।
- কানে ব্যথা হওয়া।
- মাড়িতে ব্যথা হওয়া।
- খাবার চিবিয়ে খেতে সমস্যা হওয়া।
- মুখ পুরো খুলতে না পারা।
- দাঁতের ওপর ও নিচের পাটির সারি নষ্ট হয়ে যাওয়া।
- দাঁত পেষার কারণে মুখের ভেতর কেটে যাওয়ার চিহ্ন থাকে।
- অধিক চাপের কারণে দাঁত সামনে ও পেছনে হয়ে যায়।
ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা।
- ঠান্ডা, গরম ও মিষ্টি খেলে দাঁতে শিরশির করা।
নিয়ন্ত্রণের উপায়
- বড় শিশুদের মধ্যে যদি অবসাদের কারণে এ অভ্যাস থেকে যায়, তা হলে তাদের পর্যাপ্ত ঘুম ও শরীরচর্চার ওপর জোর দেওয়া উচিত
- তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস করা। ঘুমাতে যাওয়ার আগে তাদের টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাবের মতো গেজেট ব্যবহার করতে না দেওয়া। ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা
- দাঁতের কোনো সমস্যার কারণে শিশুরা দাঁত কিড়মিড় করলে দাঁতের চিকিৎসক দেখানো
- মানসিক সমস্যা ও অবসাদ অনেক বেড়ে গেলে মনোবিদের শরণাপন্ন হওয়া।
লেখক: চিফ কনসালট্যান্ট (ডেন্টাল ইউনিট), আল-হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ঢাকা