সচেতনতার অভাবে নবজাতককে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রবণতা কমার কারণে নবজাতক মৃত্যুর হার বাড়ছে বলে জানিয়েছেন একদল বিশেষজ্ঞ। তাঁরা বলছেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকেরা মিলে কৌটা দুধের বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তারা এসব দুধ নবজাতককে খাওয়ানোর জন্য প্ররোচিত করে। ফলে নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানো হার ক্রমেই নিম্নমুখী।
আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম কর্তৃক ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৫’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরামের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. মজিবুর রহমান, ফোরামের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুফিয়া খাতুন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাতক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান, নিওনেটাল ফোরামের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনির হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত এক দশক ধরে নবজাতককে মায়ের দুগ্ধ পান করানোর হার আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, শিশুর পরিবারের অসচেতনতা, কৌটা দুধ ব্যবসায়ীদের প্রভাব এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। তা ছাড়া মাতৃদুগ্ধ পান বিষয়ে আইন না জানার কারণে নবজাতককে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর প্রবণতা কমেছে। এতে শিশুর অপুষ্টি,রোগ ও অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে।
তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে মাত্র শতকরা ৪০ জন নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। অনেক সময় শিশুর জন্য কৌটা দুধ বানানোর সময় জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এতে তারা মারাত্মক রোগে সংক্রমণ হচ্ছে। এ ছাড়াও পরিবারের ওপর কৌটা কেনা ও চিকিৎসায় বাড়তি ব্যয় হচ্ছে।
মিল্ক ব্যাংক বিষয়ে তাঁরা বলেন, অনেক নবজাতক জন্ম দেওয়ার সময় মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। এসব শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য মিল্ক ব্যাংক চালুর চেষ্টা করা হলেও তা আলোর মুখ দেখছে না। এই ক্ষেত্রে শরিয়া আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত তথ্য রেখে মিল্ক ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
মাতৃদুগ্ধের উপকারিতা বিষয়ে তাঁরা জানান, মায়ের বুকের দুধ পান করলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাশাপাশি শিশুর মস্তিষ্কের গঠন উন্নত হয়। ফলে ওই সব শিশু অন্য শিশুদের চেয়ে ৮ গুণ বেশি মেধাবী হিসেবে গড়ে উঠে। মেধাবী জাতি গড়ে তুলতে শতভাগ শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তাঁরা।