হোম > স্বাস্থ্য

অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক আর তেমন কাজ করছে না: গবেষণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎

ছবি: সংগৃহীত

জীবাণুর বিরুদ্ধে অকার্যকর হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক। এতে চিকিৎসায় যেমন বেশি সময় লাগছে, তেমনি রোগীর মৃত্যুঝুঁকিও বেড়েছে। গত এক বছরে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) অণুজীববিজ্ঞান ও রোগপ্রতিরোধবিদ্যা বিভাগ ৪৬ হাজার ২৭৯টি নমুনা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য দিয়েছে।

বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স রিপোর্ট ২০২৪-২০২৫’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাকসহ পরজীবীর বিরুদ্ধে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের ইচ্ছেমতো ব্যবহারের কারণে অনেক অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিপ্যারাসাইটিক ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না। অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে সিপ্রোফ্লোক্সাসিন, অ্যামোক্সিসিলিন, সেফট্রিয়াক্সোন, জেনটামাইসিন, মেরোপেনেম, টিগেসাইসিলিনসহ বহু ওষুধ কাজ করছে না। রোগীর দেহের জীবাণু এসব ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এর ফলে রোগীর নিরাময় দীর্ঘায়িত হচ্ছে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে।

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) হলো একটি অবস্থা; যেখানে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক বা পরজীবী অণুজীব জীবাণুবিরোধী ওষুধে কাবু না হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এসব ওষুধে তারা মারা যায় না কিংবা বৃদ্ধি ব্যাহত হয় না। ফলে সংক্রমণ নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে। বিষয়টি বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে। মূলত ওষুধের ভুল বা অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে জীবাণু ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠে।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। সভাপতিত্ব করেন অণুজীববিজ্ঞান ও রোগপ্রতিরোধবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসের ইবনে সাত্তার।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, একসময় মানুষ ব্যাকটেরিয়ার কাছে পরাস্ত হতো। তখন পর্যাপ্ত ওষুধ ছিল না। আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে মানবজাতি আবার সেই একই সংকটে পড়তে পারে। এবার ওষুধ থাকবে, কিন্তু সেগুলো ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর হবে না।

উপাচার্য বলেন, ‘সমস্যার দায় ও সমাধানের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিতে হবে। গবেষণা, নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিএমইউকে নেতৃত্ব দিতে হবে।’

বিএমইউর অণুজীববিজ্ঞান ও রোগপ্রতিরোধবিদ্যা বিভাগ গত এক বছরে ৪৬ হাজার ২৭৯ জন রোগীর নমুনা বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা গেছে, সিপ্রোফ্লোক্সাসিন, অ্যামোক্সিসিলিন, সেফট্রিয়াক্সোন, জেনটামাইসিনের মতো নিয়মিত ব্যবহৃত ওষুধ থেকে শুরু করে মেরোপেনেম ও টিগেসাইসিলিনের মতো ‘শেষ ধাপের’ শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রে কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধে জীবাণুর প্রতিরোধ দ্রুত বাড়ছে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহেদা আনোয়ার। তিনি জানান, বিশ্লেষণ করা মোট নমুনার ২৪ শতাংশ (১১ হাজার ১০৮টি) বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত। সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে ই. কোলাই। এই জীবাণুর বিরুদ্ধে সিপ্রোফ্লোক্সাসিন ও অ্যামোক্সিসিলিনের কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সালমোনেলা টাইফি জীবাণু সিপ্রোফ্লোক্সাসিন ওষুধের বিরুদ্ধে খুবই জোরালো প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

সেপট্রিয়াক্সোন, জেনটামাইসিন ও সিপ্রোফ্লোক্সাসিন জাতীয় ওষুধের বিরুদ্ধে ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া প্রজাতির জীবাণুর মাঝারি থেকে উচ্চমাত্রার প্রতিরোধ দেখা গেছে। এই প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার কারণে নিউমোনিয়া, মূত্রনালির সংক্রমণসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। বস্তুত এই প্রজাতিটির বিরুদ্ধে প্রায় সব অ্যান্টিবায়োটিকই এখন অকার্যকর হয়ে পড়ছে।

পুরুষদের টাক সমস্যার সমাধান মিলল ৫ বছর আগের এক ব্রণের ওষুধে

ওষুধ খাতে এপিআই নীতি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান

দেশে এ বছর ৪ কোটি ২৫ লাখ শিশু টাইফয়েড টিকা পেয়েছে

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

নাক ডাকা: কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিকার

চোখের যেসব রোগ পুরুষদের বেশি হয়

পিঠব্যথা: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়

সবজি সংরক্ষণ করবেন যেভাবে

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ৫ উপায়

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, হাসপাতালে ভর্তি ২০০ জন