গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবিসংবলিত মুদ্রা প্রচলন করেছে যুক্তরাষ্ট্র—এমন একটি তথ্য ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেজ ও অ্যাকাউন্টে প্রচার হচ্ছে। তাতে ড. ইউনূসের ছবিসংবলিত একটি ধাতব বস্তুর ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত লন্ডনপ্রবাসী বিএনপি নেতা তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের ছবি ও নাম ব্যবহার করে তৈরি একটি গ্রুপ থেকে এটি বেশি ছড়িয়েছে। প্রায় চার লাখ সদস্যের এই গ্রুপে গতকাল বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৪৭ মিনিটে এম মামুন নামের অ্যাকাউন্ট থেকে এমন পোস্ট দেওয়া হয়। তাতে লেখা, ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের ছবিসংবলিত মুদ্রা প্রচলন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি গর্ব বোধ করি। আপনি করতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের কেউ কি না—এ বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে।’
পোস্টটি আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বেলা ১টা পর্যন্ত ৫০০ বারের বেশি শেয়ার হয়েছে। এতে রিঅ্যাকশন পড়েছে তিন হাজার।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের একটি পাবলিক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদক-সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর থেকে জানা যায়, কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদক (সিজিএমস) কংগ্রেসের অনুমোদিত একটি অ্যাওয়ার্ড। দেশপ্রেম, কোনো নির্দিষ্ট খাতে অসামান্য অবদানের মতো বিষয়গুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং বিশিষ্টজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে কংগ্রেস এই অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। এটি দেশটির সর্বোচ্চ পদকগুলোর একটি। কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদক সর্বপ্রথম দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনকে।
কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদক-সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর থেকে আরও জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস দেশটির টাঁকশালকে কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদকের প্রতিলিপি তৈরি এবং সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রির অনুমোদন দেয়। টাঁকশাল কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদকের অনুরূপ ব্রোঞ্জ পদক তৈরি করে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে থাকে।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ফেসবুকে যুক্তরাষ্ট্রের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবিসংবলিত মুদ্রা প্রচলন করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। পোস্টগুলোতে যে ছবি প্রচার করা হচ্ছে, সেটি দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদকের ব্রোঞ্জের তৈরি প্রতিলিপি।